• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

ডুমুরিয়ায় নৌকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এমপি পুত্র বিশ্বজিতের !

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০১৯  

ডুমুরিয়ায় উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীকে হারাতে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন এমপি পুত্র বিশ্বজিত। প্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ঘোড়া প্রতীকের লিফলেট বিতরণসহ চালিয়ে যাচ্ছে প্রচার প্রচারণা। নৌকাকে হারাতে সমর্থকদের মারপিট, হুমকি ধামকিসহ বেছে নেয়া হচ্ছে নানা অপকৌশল। সাধারণ ভোটারদের মাঝে সৃষ্টি করা হচ্ছে ত্রাস ও আতংক। এমন অভিযোগ আ’লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের। আশু এ অপশক্তি রুখে দিতে না পারলে নিরাপদে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তারা।

সূত্রমতে, নানা নাটকীয়তার পর আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ডুমুুিরয়ায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা সরোয়ার, হাতুড়ী প্রতীক নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনীত প্রার্থী সেলিম আকতার স্বপন,স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকে এজাজ আহমেদ, দোয়াত কলম প্রতীকে শাহনেওয়াজ হোসেন জোয়ার্দ্দার ও আনারস প্রতীকে মোল্যা মাহবুবুর রহমান। গত ১৪ মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে সকল প্রার্থী শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে আসছিলেন। নৌকার পালে লেগেছিলো হাওয়া। এ অবস্থায় নৌকার বিজয় নিশ্চিত জেনে, নৌকাকে হারাতে মরিয়া হয়ে ওঠে উপজেলা আ’লীগের এক শীর্ষনেতা। আর এ মিশন বাস্তবায়ন করতে বেছে নেয়া হয় নানা অপকৌশল।

তারই অংশ হিসেবে গত ১৮ মার্চ ডুমুরিয়া উপজেলার ওই শীর্ষ নেতার আমন্ত্রনে কতিপয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বেশকিছু দলীয় নেতা-কর্মী নিয়ে যশোর শহরের আইটি পার্ক রেষ্টুরেন্টে এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিন্ধান্ত অনুযায়ী যেকোন মূল্যে নৌকার প্রার্থীকে হারাতে প্রশাসনের দায়িত্ব নেন ওই শীর্ষনেতা নিজেই। মাঠ দখলের দায়িত্ব দেন উপস্থিত নেতা-কর্মীদের। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে নির্বাচনী মাঠে প্রভাব বিস্তার, এলাকা ভিত্তিক ত্রাস সৃষ্টি করতে দায়িত্ব দেন বৈঠকে উপস্থিত থাকা কয়েকজন তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী ও চরমপন্থীকে। যেমনি কথা তেমনি কাজ, ওই রাতেই চুকনগর বাসষ্ট্যান্ডে অতর্কিতভাবে হামলা চালানো হয় নৌকার সমর্থক আশরাফ আলী গাজী (৪০), খায়রুল শেখ (৩৫) ও ইছারুল শেখ (৩০)’র উপর। একই রাতে শাহপুর এলাকা বাপ্পি খান (৩৫) ও সাইফুল ইসলাম (৪০)’র উপর। গত ১৯ মার্চ রাতে খর্ণিয়া বাজারে তান্ডব ও হামলা চালানো হয় স্থানীয় ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি নারায়ন চন্দ্র মল্লিক (৫৫), আ’লীগনেতা পরিতোষ হালদার (৪৮)ও আঃ রাজ্জাকের উপর। ২০ মার্চ রাতে আবারও হামলা চালানো হয় চুকনগর এলাকার যুবলীগনেতা ও স্কুল শিক্ষক রবিউল ইসলাম (৩৯)’র উপর। দখলে নেয়া হয় চিংড়া, লাইন বিলপাবলা, আঠার মাইলসহ নৌকার বেশ কয়েকটি নির্বাচনী অফিস।

সবমিলে বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় থমথমে পরিবেশ। এ সময় ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে কোমর বেঁধে মাঠে নামে স্থানীয় এমপি পুত্র। তিনি ‘ঘোড়ার চাটিতে নৌকা তলিয়ে যাবে’ এমন উক্তি করে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী সাথে নিয়ে ঘোড়া প্রতীকের লিফলেট বিতরণসহ আদাজল খেয়ে দিনরাত প্রচার-প্রচারনায় নেমে পড়েছেন। এ নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব।

নৌকা প্রতীক নিয়ে বাবা যখন এমপি, সেই নৌকাকে হারিয়ে কেন একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ওই শীর্ষনেতা ও এমপি পুত্র ? এমন প্রশ্ন করে খর্ণিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি নারায়ন চন্দ্র মল্লিক, পরিতোষ কুমার হালদার, গুটুদিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি বিরাজ কান্তি মল্লিকসহ অনেকেই বলেন,আমরা আওয়ামীলীগ দল করি, আজীবন দলীয় প্রতীক নৌকায় ভোট দিয়ে আসছি। এখন কেন এ নৌকা সে নৌকা নয় এমন অপপ্রচার ও দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও ত্রাস সৃষ্টি করা হচ্ছে এ আমাদের বোধগম্য নয়। তারপরও তো লেগেছে নৌকার পালে হাওয়া। কিসের জন্য এত অপপ্রচার।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ার বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে উপজেলা আ’লীগের এক বিশেষ নেতার নির্দেশে আমার নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হচ্ছে। দখল করা হচ্ছে নৌকার নির্বাচনী অফিস। নৌকাকে হারিয়ে ঘোড়া প্রতীক বিজয়ী করতে প্রকাশ্যে মাঠে নামিয়ে দেয়া হয়েছে এমপি পুত্র বিশ্বজিত চন্দ্র চন্দকে। বিভক্ত করা হচ্ছে ডুমুরিয়া উপজেলা আ’লীগকে।

এ প্রসঙ্গে থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন করে কেউ কোন অশান্তি সৃষ্টি করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা