• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

ডাক্তাররা অপারেশনে ব্যস্ত, রোগী বাজাচ্ছেন বেহালা ! (ভিডিও)

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

অপারেশন থিয়েটারের টেবিলে শুয়ে রয়েছেন এক রোগী। চলছে জটিল অস্ত্রোপচার। মস্তিষ্কের টিউমার বাদ দিতে তখন হিমশিম খাচ্ছেন অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা। সকলের চোখেমুখেই দুশ্চিন্তার ছাপ। তবে এসবে কোনও হেলদোল নেই টেবিলে শুয়ে থাকা ওই রোগীর। বরং আপনমনে বেহালা বাজাচ্ছেন তিনি। নিবিষ্ট মনে সুর তুলছেন বেহালায়।

সদ্যই প্রকাশ্যে এসেছে এমনই এক ভিডিও। যা দেখে তাজ্জব হয়ে যাচ্ছেন সবাই। ইউরোপের একটি হাসপাতালে ঘটেছে এমন কাণ্ড। যেখানে ব্রেন টিউমারের মতো জটিল অপারেশনের সময় ওটি টেবিলে শুয়ে বেহালা বাজিয়েছেন খোদ রোগী। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গত ৪০ বছর ধরে বেহালা বাজাচ্ছেন ওই রোগী। এটাই তার একমাত্র শখ এবং নেশা। কিন্তু মস্তিষ্কের ডানদিকে ফ্রন্টাল লোবের কাছে বাসা বেঁধেছে টিউমার। এর জেরে চিরতরে অক্ষম হয়ে যেতে পারেন এই রোগী। আর হয়তো কোনওদিন বেহালা বাজানো সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ মস্তিষ্কের যে অংশ থেকে মানব শরীরের বাঁ-হাতের গতিবিধি নিয়ন্ত্রত হয়, তার আশেপাশেই আস্তানা বানিয়েছিল এই টিউমার।

ডাগমার টার্নার নামে বছর ৫৩-র ওই নারী ছিলেন প্রফেসর কেউমারস আশকানের তত্ত্বাবধানে। কিংস কলেজ হাসপাতালের এই নিউরোসার্জেন মনে মনে ভেবেই নিয়েছিলেন যাই হোক না কেন কিছুতেই তার রোগীর বেহালা বাজানোর ক্ষমতা লোপ পেতে দেবেন না। তাই অপারেশনের জন্য এক নতুন ছক কষেন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের দল। তাদের পরিকল্পনা ছিল যখন খুলি খুলে অপারেশন চলবে তখন বেহালা বাজাবেন ডাগমার। তাহলে তার বেহালা বাজানোর ক্ষমতা বজায় থাকছে, নাকি কোনও অসুবিধে হচ্ছে সেটা সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পারবেন চিকিৎসকরা।

প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে অস্ত্রোপচার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৯০ শতাংশ টিউমার বাদ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। মস্তিষ্কের যেসব জায়গায় মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল সেইসব সম্ভাবনা এড়ানো গিয়েছে। এখন আর কোনও ভয় নেই। আর অপারেশনের পরেও সফল ভাবেই কাজ করছে ডাগমারের বা-হাত। অতএব নিশ্চিন্তে বেহালা বাজাতে পারবেন তিনি।

অস্ত্রোপচারের পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ডাগমার নিজেও। তিনি বলেছেন, দশ বছর বয়স থেকে বেহালা বাজাই। ওটাই আমার সবকিছু। তাই ব্রেন টিউমার হয়েছে শুনে ভীষণ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কারণ তখনই জানতে পেরেছিলাম হয়তো অপারেশনের ফলে অকেজো হয়ে যাবে আমার বাঁ-হাত। তাহলে আর কোনওদিন বেহালা বাজানো হবে না, এই ভেবেই ভয়ে-আতঙ্কে ছিলাম। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকায় এখন খুব খুশি ডাগমার। ধন্যবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসক আশকানকেও। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা