• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

ডাক্তার সেজে অপারেশন করছিলেন ওয়ার্ডবয় !

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২০  

ডাক্তার সেজে প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশন করছিলেন ওয়ার্ডবয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে হাতেনাতে ধরেন তিনি। এরপর ওই ওয়ার্ডবয়কে কারাদণ্ড এবং ভুয়া নার্স ও ক্লিনিক মালিককে জরিমানা করে ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার রাতে খোকসার আইডিয়াল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

প্রসূতির পরিবার সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে সন্তানসম্ভাবা শ্রাবন্তীর (২৫) প্রসব বেদনা উঠলে খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে এক সিনিয়র স্টাফ নার্স ও স্থানীয় এক দালালের খপ্পরে পড়ে বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে স্থানীয় আইডিয়াল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এ সময় জেলা সদর থেকে ডাক্তার আসছে বলে ক্লিনিক মালিক ওই নারীর পরিবারকে জানায়। রাত ৯টার দিকে ওই নারীর প্রসব বেদনা বাড়লে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়।

সেখানে ক্লিনিকের ওয়ার্ডবয় নোমান (৩০) ও ভুয়া নার্স রেশমা (২২) প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশন শুরু করেন। এ সময় গোপনে খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল ক্লিনিকের অভিযান চালায়। দলটি অপারেশনরত ওয়ার্ডবয় নোমান ও ভুয়া নার্স রেশমাকে আটক করে তাদের কাছে বৈধ কাগজ দেখতে চায়। কিন্তু ক্লিনিক মালিক কাইসারুল আলম সৌদসহ অন্যরা তাদের কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ওয়ার্ড বয় নোয়াবকে ২০ দিনের কারাদণ্ড ও ভুয়া নার্স রেশমাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

একই সঙ্গে ক্লিনিক মালিককে একলাখ টাকা জরিমানাসহ ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেন আদালত। রাতেই ক্লিনিক ফাঁকা করে সিজারিয়ান অপারেশন হওয়া শ্রাবন্তী ও শাপলা নামের অপর এক প্রসূতি ও দুই নবজাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বাকি দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

প্রসূতি শ্রাবন্তীর বাবা কালাম জানান, তার এক আত্মীয় ও এক নার্সের পরামর্শে মেয়েকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করেন তিনি। কুষ্টিয়া থেকে ভালো ডাক্তার এনে অপারেশন করানোর কথা বলেছিল তারা। কিন্তু রাতে গোপনে ওয়ার্ডবয়কে দিয়ে অপারেশন শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স এই দালাল চক্রের সঙ্গে জড়িত। দায়ী নার্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ উপজেলা সদরের সব অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম আরিফুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি ওই ক্লিনিকে যান। অপারেশন শেষ হওয়ার পর ওয়ার্ডবয় ও ভুয়া নার্সকে হাতেনাতে ধরেন তিনি। তারা কোনো কাগজ দেখাতে না পারায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের দণ্ড ও ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা