ঝিয়ের কাজ, লাঙ্গল চাষ করেও সফল ক্রীড়াবিদ সান্ত্বনা রায়
আজকের খুলনা
প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০২০
সান্ত্বনা রানী রায়- লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার হরিদাস গ্রামের এই যুবতির কোন গুণটি দিয়ে লেখা শুরু করবো তা ভাবতে হলো বেশ কিছু সময়। ৩৭ বছরে পা দেবেন আগামী জুনে। ফেলে আসা ৩৬ বছরের তার সংগ্রামী জীবনের সর্বশেষ ঘটনা দিয়েই শুরু করা যাক।
ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৩ শ’ কিলোমিটার। রোববার ঢাকা থেকে তিনি মটরসাইকেল চালিয়ে চলে গেছেন নিজ গ্রামে! সকাল ১১ টায় রওয়ানা দিয়ে ঘরে পৌঁছান সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায়। পাক্কা সাড়ে ৮ ঘণ্টা।
সুবাস চন্দ্র রায় আর যমুনা রানী রায় দম্পতির চার সন্তানের বড় সান্ত্বনার এখন বড় পরিচয় তিনি আন্তর্জাতিক তায়কোয়নদোর একজন সফল খেলোয়াড়।
এই ডিসিপ্লিনের বিশ্বকাপেও খেলেছেন দুইবার। এর মধ্যে একবার ব্রোঞ্জ পদকও জিতেছেন। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ১০ টি স্বর্ণ, ২টি রৌপ্য এবং ২টি ব্রোঞ্জ পদক জেতা এই নারী ক্রীড়াবিদের জীবনের গল্পটা আলাদা। জীবন-সংগ্রাম কি সেটা হাড়েহাড়ে টের পেয়েই বড় হয়েছেন লালমনিরহাটের এই যুবতি। দিস্তা দিস্তা কাগজেও শেষ হবে না তার জীবনের পুরো কাহিনী লেখা।
সান্ত্বনাদের সংসারে দিন আনতে পান্তা ফুরায়। সুবাস চন্দ্র ও তার ভাইয়ের যৌথ পরিবার ছিল। দুই ভাইয়ের সব সন্তানেরই বড় সান্ত্বনা। অভাবের সংসারের বড় মেয়ে ছিল যেন অন্যদের বোঝা। সংসার থেকে তাড়াতে একটু বয়স হওয়ার পর থেকেই বিয়ে দেয়ার চেষ্টা। তার মা যমুনা রানী ছিলেন পুরো পরিবারের মধ্যে একটু শিক্ষিতা। মাধ্যমিক পাশ করা যমুনা রানী এক সময় ব্র্যাক-এ চাকরিও করতেন। তার বাধার কারণেই বাল্য বিয়েটা আটকেছিল সান্ত্বনার।
হরিদাস দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও পরে আদিতমারী কান্তেশ্বর বর্মন বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে মাসে মাত্র ৬০০ টাকা বেতনে কিছুদিন গণশিক্ষায় চাকরি করেছিলেন সান্ত্বনা।
বয়স্ক নারীদের লেখাপড়া শেখানোর পাশাপাশি নানা ধরনের হাতের কাজের প্রশিক্ষণও দিতে হতো তাকে। সংসারের ঘানি টানা, নানা বঞ্চনা- এ সবকিছু থেকে দুরে থাকতে একটু বাইরে (দুরের শহরে) পড়াশুনা করতে চাইলেন সান্ত্বনা। ২০০৫ সালে রংপুর সরকারী কলেজে ভর্তি হন অনার্সে (ইতিহাস)।
ওই সময়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসারে চাকরির চেষ্টাও করেছিলেন সান্ত্বনা; কিন্তু পারেননি তার বাবার বাধার কারণে। তার কিছু আত্মীয়-স্বজন সুবাস চন্দ্র রায়কে নিরুৎসাহী করেছেন মেয়েকে যেন সার্ভিসেস চাকরিতে না পাঠান। রংপুর শহরে থেকে পড়াশুনার করার সংগতি ছিল না বলে বাড়ি থেকেই কলেজে যাওয়া-আসা করতেন।
খেলাধুলায় বেশ পারদর্শী ছিলেন; কিন্তু পড়াশুনার পাশপাশি তাকে জমিতে কাজ করতে হতো টাকার জন্য। যে কারণে খেলাধুলা করাটা কঠিন ছিল তার পক্ষে। তবে সুযোগটা তার এসে যায় ওই বছরই। রংপুর স্টেডিয়ামে তখন মার্শাল আর্ট ট্রেনিং হতো। ভর্তি হলেন সেখানে। মায়ের কাছ থেকে আগে বিভিন্ন যোগ-ব্যায়াম শিখেছিলেন। মার্শাল আর্ট শিখতে কাজে লাগলো সে গুলো। অনার্স পাশ করে ২০০৮ সালে মাস্টার্সে ভর্তি হন রাজশাহী কলেজে।
২০১১ সালে প্রথম ঢাকায় অংশ নেন জাতীয় আইটিএফ তায়কোয়নদো চ্যাম্পিয়নশিপে। প্রথম অংশগ্রহণেই ব্ল্যাকবেল্টকে হারিয়ে চমক দেখান, প্রতিযোগিতায় পান রৌপ্য পদক।
সেই যে শুরু আর পেছনে তাকাননি। ২০১২ থেকে ২০১৭- পর্যন্ত পাঁচটি আসরে স্বর্ণ জিতে নিজেকে সেরা প্রমাণ করেন সান্ত্বনা। স্বাভাবিকভাবেই জায়গা পেয়ে যান বিশ্বকাপ দলে। ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশতম বিশ্ব তায়কোয়নদো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ফেরেন ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে।
২০১৮ থেকে এখন পর্যন্ত ৫টি ঘরোয়া প্রতিযোগিতা ও দুটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ৫টি স্বর্ণ এবং একটি করে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন সংগ্রামী এ নারী ক্রীড়াবিদ।
সান্ত্বনা যখন রংপুর সরকারী কলেজে অনার্সে অধ্যায়নরত, তখন নিজের পড়ার খরচ যোগাতে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজও করতে হয়েছে তাকে। ‘আমার কষ্টের এসব কাহিনী আমি গর্ব করেই বলবো। কারণ, সেটা ছিল আমার জীবন সংগ্রাম। অন্যের বাড়িতে থালা-বাসন ধুয়ে, রান্না-বান্না করে, টিউশনি করে, কোচিং সেন্টারগুলোয় পার্টটাইম ক্লাস নিয়ে আমি আয় করে নিজের পড়ার খরচ জুগিয়েছি। সপ্তাহের দিনগুলো ভাগভাগ করে এ কাজগুলো আমাকে করতে হয়েছে। যেমন কয়েকদিন ঝিয়ের কাজ, কয়েকদিন টিউশনি, কয়েকদিন কোচিং সেন্টারে পার্টটাইম ক্লাস। আমি জমিতে লাঙ্গল চালিয়েও পড়ার খরচ জোগাড় করেছি। কারণ, বাড়ি থেকে কোনো টাকা-পয়সা দিতে পারতো না। বরং তাদেরকে কিছুকিছু আমাকেই দিতে হতো’-নিজের সংগ্রামী জীবন কাহিনী এভাবে বলছিলেন সান্ত্বনা রানী রায়।
বর্তমানে ২০ হাজার টাকা বেতনে চাকুরি করেন ক্যাম্ব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে গিয়ে মার্শাল আর্ট তায়কোয়নদো শেখাতে হয়। নিজের মটরবাইক চালিযে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে যাতায়াত করেন। বাইকের তেলের টাকাও নিজের পারিশ্রমিক থেকে খরচ করতে হয়। যে কারণে, ২০ হাজার টাকায় নিজের চলার পর তেমন কিছু দিতে পারেন না বাড়িতে। ৮০ হাজার টাকা দিয়ে কিস্তিতে মটরসাইকেলটি কিনেছিলেন। এখন কিস্তি পরিশোধ হয়েছে পুরোপুরি।
মেজো বোন ববিতা রানী রায়কে বিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র ভাই রতন কুমার রায় পদার্থ বিজ্ঞানে অর্নাস পাস করার পর এখন মানসিক রোগি। ভাইয়ের চিকিৎসা আর ছোট বোনের পড়ার খরচ জোগাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছেন সান্ত্বনা রানী।
বোনের বিয়ে দিলেও নিজের বিয়ের খবর নেই। এ পর্যন্ত ৪-৫ টি বিয়ে প্রস্তাব আসলেও হয়নি। কেউ যৌতুক চায়, কারো আবার মেয়ের বাড়ি-ঘর পছন্দ হয় না। ‘বিসিএস ক্যাডারের এক ছেলে দেখেছিলেন। ১০ লাখ টাকা যৌতুক চান, এক এসআই দেখেছিলেন। তিনি চান ১৫ লাখ টাকা যৌতুক; কিন্তু আমার বাবা এত টাকা পাবেন কোথায়? জমিজমা যা ছিল বিক্রি আর বন্ধক দেয়ার পর আছে অল্প। সেখানে বাবা তামাকের চাষ করেছেন। তামাক উঠলে আবার ধান লাগাবেন। আমার বাবার বা আমার পক্ষে কি ১০-১৫ লাখ টাকা যৌতুক দেয়া সম্ভব?-প্রশ্ন সান্ত্বনার।
নারী হয়ে এভাবে মটরসাইকেল চালান কিভাবে? ঢাকা থেকে লালমনিরহাট চলে যান, আবার আসেন। এটা তো রীতিমত দুঃসাহসিক ব্যাপার। ‘আমার কাছে কিছুই না। তাহলে শুনুন, গত বছর আমার দাদু মারা যাওয়ার খবর পাওয়ার পর মটরসাইকেলে প্রথম ঢাকা থেকে লালমনিরহাট যাই। রাত আড়াইটায় আমি রওয়ানা দিয়েছিলাম। বাড়ি পৌঁছেছিলাম সকাল ১০টার দিকে। যাওয়ার সময় শুধু একজায়গায় ভয় পেয়েছিলাম। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা নামক এক জায়গায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিছু মাতাল ছেলে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। মনে হয়েছিল যদি আমার মটরসাইকেলটা নিয়ে নেয়? তারপরও আমি চালিয়ে চলে এসেছি। মাঝে মধ্যে সুবিধামতো জায়গায় বিশ্রাম নিয়ে আবার মটরসাইকেল চালিয়েছি। এখন ঈদ ও পূজায় গাড়িতে যাত্রীর চাপ থাকলে আমি মটরসাইকেল নিয়েই লালমনিরহাট যাওয়া-আসা করি’-বলছিলেন সংগ্রামী ক্রীড়াবিদ সান্ত্বনা।
- ‘শিশুসাহিত্যিক পরিচয়ের আড়ালে পর্নোগ্রাফি বানাতেন টিপু কিবরিয়া’
- পাট শিল্পের উন্নয়নে জুট কাউন্সিল গঠন করা হবে : পাটমন্ত্রী
- সারাদেশে ইন্টারনেটে ধীরগতি, ঠিক হতে লাগবে ১ মাস
- পাইকগাছায় শ্রমজীবি মানুষের মাঝে সুপেয় পানি ও শরবত বিতরণ
- খুবি উপকেন্দ্রে জিএসটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২৭ এপ্রিল এবং ০৩ ও ১০
- হজযাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেললে এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থারহুঁশিয়ারি
- আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারপতি
- বাগেরহাটে পর্নোগ্রাফি মামলায় কনস্টেবল কারাগারে
- কয়রায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নীরব প্রশাসন
- উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করা প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল
- খুলনায় ওয়ান শুটার গানসহ আটক ১
- মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা করতে চায় ভারত: প্রণয় ভার্মা
- ডিজিটাল জরিপকালে জমির মালিকদের জানাতে হবে : ভূমিমন্ত্রী
- সেই দুই ইউপি চেয়ারম্যান পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন
- বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি করিডোরের জন্য কেনা হচ্ছে ১৩৭টি এসি বাস
- ঢাকার পয়ঃবর্জ্য ও গ্যাসলাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ
- চলছে কয়লা খালাস, জাহাজেই ফিরবেন এমভি আবদুল্লাহর সব নাবিক
- দুই মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট
- ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন
- সম্পর্ক নতুন উচ্চতায়
সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের আমিরের - কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা
- ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলো আরও এক দেশ
- মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা নির্দেশ না মানলে ব্যবস্থা: কাদের
- থাইল্যান্ডে শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক
- মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকার নিয়ে গবেষণার আহ্বান
- গ্যাস খাতে বড় সংস্কার করবে পেট্রোবাংলা
- বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় কিরগিজস্তান
- চলবে ১২০ দিন
নোয়াখালীর নতুন গ্যাস কূপে খনন কাজ শুরু
- আমি আসলাম আর আপনি চলে যাচ্ছেন: নাসিরকে পরীমনি
- আজ থেকে শুরু ফিরতি ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি
- পায়ুপথে পেটের ভেতর ২৫ ইঞ্চি কুঁচিয়া মাছ, জ্যান্ত উদ্ধার
- ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই একে একে মৃত্যুর কোলে ৪
- ৫০ বছর পর মা-মেয়ের মিলন
- দেশের জনগন সন্ত্রাস দমন ওআইনশৃঙ্খলার উন্নাতি হওয়ায় সুফল ভোগ করছেন
- কেসিসির ৩৭ কর্মচারী চাকরিচ্যুত
- শিকলে বেঁধে ২৫ দিন ধরে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ
- ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত কতটুকু পানি পান করবেন
- ইতিকাফের জন্য যেসব শর্ত মানতে হবে
- ডুমুরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- বগুড়ায় সিনেমা হলে টিকিটের সঙ্গে বিরিয়ানি ফ্রি
- ভালো শিক্ষার্থী হলেই হবে না, আদর্শবান মানুষ হতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
- ‘অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার সুস্থ আছেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে’
- খুলনায় বাসে তল্লাশি, ১২ স্বর্ণের বারসহ যুবক আটক
- অনলাইনে ঝুঁকছেন ক্রেতারা
- হার্টের ২৩ ধরনের রিংয়ের দাম কমলো
- তাপদাহ নিয়ে যা জানালেন হিট অফিসার
- রাসুল (সা.) রোজা অবস্থায় যেসব কাজ পরিহার করতে বলেছেন
- বিশ্বের সব দেশেই পরকীয়ার অস্তিত্ব আছে...