• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এগিয়ে আসুন

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৯  

বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণের কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানীবাসী। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ঢাকার বাতাসের যে চিত্র পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে এটি এখন লাল ক্যাটাগরির। অর্থাৎ স্বাস্থ্যের জন্য তা ‘মারাত্মক ক্ষতিকর’। অন্যদিকে শব্দ দূষণের কারণেও মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের জোরালো পদক্ষেপ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।

‘বৈশ্বিক বায়ু পরিস্থিতি-২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আর বায়ুদূষণের কারণে শিশুমৃত্যুর হারের দিক থেকে পাকিস্তানের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। ঢাকার চারপাশে প্রায় এক হাজার ইটভাটা নভেম্বর থেকে চালু হয়। সেগুলো ওই বায়ুদূষণের জন্য ৫৮ শতাংশ দায়ী। এ ছাড়া শীতকাল বা শুষ্ক মৌসুম শুরু হলেও বেশির ভাগ অবকাঠামোর নির্মাণ ও মেরামতকাজ শুরু হয়। এ কারণেও এই সময় বায়ুদূষণ বেড়ে যায়। অন্যদিকে শব্দ দূষণের কারণে দেখা দিচ্ছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার এই শব্দদূষণ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। দুঃখজনক হচ্ছে, সারাদেশে যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারে সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করছে না কেউ। বরং দেশের অধিকাংশ যানবাহনেই হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করা হচ্ছে। সাধারণভাবে মানুষ ৪০ থেকে ৪৫ ডেসিবল মাত্রার শব্দই ভালো শুনতে পায়। তার চেয়ে বেশি মাত্রার শব্দ মানুষের শ্রবণশক্তিসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। অথচ দেশের ৮০ শতাংশ যানবাহনে এখনো ব্যবহার হচ্ছে হাইড্রোলিক হর্ন। যা ১০০ ডেসিবলেরও বেশি মাত্রার শব্দ সৃষ্টি করে থাকে।

 শব্দ দূষণের ফলে মানুষের শ্রবণ ক্লান্তি এবং বধিরতা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া যে সকল রোগ হতে পারে তার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, কণ্ঠনালীর প্রদাহ, আলসার, মস্তিষ্কের রোগ, কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস, বদমেজাজ বা খিটখিটে মেজাজ, ক্রোধ প্রবণতা, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, রক্তনালীর সংকোচন এবং হার্টের সমস্যা অন্যতম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৬০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ মানুষকে অস্থায়ী বধির এবং ১০০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ মানুষকে স্থায়ীভাবে বধির করে দেয়। 

মোটর ভেহিক্যাল অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী নিষিদ্ধ হর্ন ব্যবহারে মাত্র ১০০ টাকা জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে জরিমানা মাত্র ১০০ টাকা হওয়ায় গাড়ির চালকরাও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন না। তাছাড়া অনেক চালক আইনে হাইড্রোলিক হর্ন নিষিদ্ধের বিষয়টি জানেও না। মানুষের শ্রবণ সীমার স্বাভাবিক মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল। যার বেশি হলে শব্দ দূষণে পরিণত হয় যা থেকে মানুষের শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়। শব্দ দূষণের ফলে মানুষের শ্রবণ ক্লান্তি এবং বধিরতা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া যে সকল রোগ হতে পারে তার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, কণ্ঠনালীর প্রদাহ, আলসার, মস্তিষ্কের রোগ, কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস, বদমেজাজ বা খিটখিটে মেজাজ, ক্রোধ প্রবণতা, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, রক্তনালীর সংকোচন এবং হার্টের সমস্যা অন্যতম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৬০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ মানুষকে অস্থায়ী বধির এবং ১০০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ মানুষকে স্থায়ীভাবে বধির করে দেয়।

শব্দদূষণ থেকে বাঁচতে হলে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার বন্ধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার নিষিদ্ধের আদেশ যাতে বাস্তবায়ন হয় এ ব্যাপারে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও আমদনি নিষিদ্ধ নয় বা এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই। তাই আমদানি করা হচ্ছে হাইড্রোলিক হর্ন। এ ব্যাপারে আইনি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে আমদানির ওপর। গাড়ির চালককেও সচেতন করতে হবে। শব্দদূষণ থেকে সবাই যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অনুধাবন করতে হবে সেটিও। বায়ুদূষণ বন্ধেও নিতে হবে কার্যকরী পদক্ষেপ। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এর কোনো বিকল্প নেই।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা