• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

ছাত্রলীগ থেকে বাদ পড়ছেন বিতর্কিত ৫০ নেতা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০১৯  

চলতি সপ্তাহেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়ছেন নানা কারণে বিতর্কিত ও নিষ্ক্রিয় অন্তত ৫০ নেতা। তাদের মধ্যে বিতর্কিত অন্তত ৩০ জন। এ ছাড়া সংগঠনে নিষ্ক্রিয় ও চাকরি করছেন এমন অন্তত আরও ১০ জন রয়েছেন। শূন্য হওয়া এসব পদে শিগগিরই যোগ্যদের স্থলাভিষিক্ত করা হবে। এ ছাড়া চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই সম্মে’লন হওয়া ইউনিটগুলোর কমিটি ঘোষণা করা হবে। বিতর্কিতদের বাদ দেওয়া বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে এটি নিয়ে কাজ করছি। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমি’টিতে যারা বিতর্কিত আছে, তাদের একটি তালিকা হাইকমান্ডের কাছে দিয়েছি। দুই-তিন দিনের মধ্যেই আমরা এ তালিকা প্রকাশ করব। চাকরিজীবী, অনুপ্রবেশকারী, যাদের ছাত্রলীগ করার বয়স শেষ হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত, এমন ২৫ থেকে ৩০ জনকে বাদ দেওয়া হবে।

রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘো’ষণার পরই অন্তত শতাধিক নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে। তাদের বাদ দিয়ে যোগ্যদের মূল্যায়নের দাবিতে আন্দোলনে নামেন সংগঠনের পদবঞ্চিতরা। টানা কয়েক দিন অনশন কর্মসূচিও পালন করেন তারা।

এর পর কয়েকজনকে পদচ্যুত করার কথা প্রেস রিলিজ দিয়ে জানান শোভন-রাব্বানী। তবে তারা কারা সে পরিচয় জানানো হয়নি। ফলে আন্দোলনকারীরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। কয়েক মাস আগে চাঁদা দাবির অভিযোগের ভিত্তিতে পদত্যাগে বাধ্য হন শোভন ও রাব্বানী। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সভাপতি হন আল নাহিয়ান খান জয়। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন লেখক ভট্টাচার্য। দায়িত্বগ্রহণের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও তারা কোনো প’দক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন আন্দোলনকারী নেতাকর্মীরা। নতুন নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে।

এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ছাত্রলীগের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে আমরা শুরু থেকেই কাজ করছি। অপরাধ করে কেউ পার পাচ্ছে না। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিতর্কিতদেরও বাদ দেওয়া হবে।

জানা গেছে, মাদকাসক্ত, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে যুক্ততা, অতীতে ছাত্রদল-শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতি করার নির্ধারিত বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়া, রাজনীতিতে সক্রিয় না থেকেও হঠাৎ পদ পাওয়া, বিবাহিত, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, এমন অভিযোগ রয়েছে অনেক নেতার বিরুদ্ধে। জয়-লেখক নেতৃত্ব নেওয়ার পর এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখে চিহ্নিতদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এদের বাদ দেওয়ার পর ছাত্রলীগের ত্যাগী ও যোগ্যদের শূন্য পদগুলোয় স্থলাভিষিক্ত করা হবে।

এ ছাড়া চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল কলেজসহ সম্মেলন হওয়া ইউনিটগুলোর কমি’টি ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, কয়েকটি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। শিগগিরই সম্মেলন হয়ে যাওয়া বাকি ইউনিটগুলোর কমিটি দেওয়া হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটগুলোয় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
স্বচ্ছ ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিত জয়-লেখক দায়িত্ব নেওয়ার পর আশাবাদী হয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিতর্কিতরা বাদ পড়বে, সংগঠন গতিশীল হবে এমন আশা করছিলেন তারা। তবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাস পরও বিতর্কিতদের বাদ না দেওয়ায় হতাশ হন তারা।

গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, সংগঠন স্থবির হয়ে পড়ছে। নতুন নেতৃত্ব প্রতিশ্রুতি দিয়েও কোনো কাজ করছে না। সাংগঠনিক সফরেও যাচ্ছেন না তারা। অবশ্য এ সময়ে চাঁদাবাজ, ছিনতাই, মাদকসহ কয়েকটি অনাকাংখিত ঘটনায় জড়িতদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার, সংগঠনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে কয়েকটি কমিটি বিলুপ্ত করেন তারা। এ ছাড়া প্রটোকল ছাড়া চলাফেরা, নিয়মিত মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে নেতাকর্মীদের সময় দেওয়া এবং অন্য শিক্ষার্থীদের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থাকায় প্রশংসিত হচ্ছেন নতুন দুই শীর্ষনেতা।

ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ছাত্রলীগ স্থবির হয়ে পড়েছে বা দৃশ্যমান কোনো কাজ হয়নি, এ কথাটা আসলে ঠিক নয়। আমরা ছাত্রলীগকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছি। সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করতে যা যা করা দরকার তাই করছি। প্রটোকল বা বিশাল বহর নিয়ে ঘুরে বেড়াই না বলে আমাদের কাজ হয়তো চোখে কম পড়ে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা