চুনারুঘাটে চা বাগানের কুয়া থেকে বিপন্ন বনরুই উদ্ধার
আজকের খুলনা
প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০২০
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নালুয়া চা বাগান। ভারত সীমান্ত ঘেষা এই বাগান এর শ্রমিক ও আশপাশের এলাকার লোকজন কিছুদিন পূর্বেও পানীয় জলের জন্য ব্যবহার করত পাতকুয়া। সম্প্রতি সেখানে নলকূপ বসার পর লোকজন আর কুয়ার পানি ব্যবহার করে না। তবে কুয়াগুলো এখনও দৃশ্যমান এবং সেগুলোতে পানি জমানো থাকে। বুধবার সকাল ৮টায় ওই বাগানের গোলটিলা এলাকার রিক্সাচালক উসমান আলী ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে বের হয়ে যখন হাত মুখ ধোয়ার জন্য নলকূপে যান তখন পাশেই থাকা কুয়ার মাঝে নড়াচড়ার শব্দ শোনেন। কিছুটা ভয় আর কৌতুহল নিয়ে এগিয়ে যান কুয়ার কাছে। গিয়ে দেখেন একটি অপরিচিত প্রাণী কুয়ার ভেতর নড়াচড়া করছে। এরপর সবাইকে নিয়ে খুন্তি দিয়ে মাটি খুড়ে কুয়ার ভেতর থেকে উপরে নিয়ে আসেন প্রাণীটি। এই প্রাণীটি হলো মহাবিপন্ন প্রাণী বনরুই।
কিছু ভণ্ড কবিরাজ বনরুই মেরে দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে তথাকথিত ওষুধ তৈরির নাম করে ব্যবসা ফাঁদছে। যদিও এসব ওষুধের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল।
পরে সেটির কোমরে রশি বেঁধে বাড়ীর আঙ্গিনায় আটকে রাখেন তিনি। মুহূর্তেই খবরটি রটে গেলে তার বাড়ীতে শত শত লোকজন এসে ভিড় জমায় প্রাণীটিকে এক নজর দেখার জন্য। তবে শিশুদের মাঝে ছিল ব্যাপক উৎসাহ।
রিক্সা চালক উসমান আলী বলেন ‘আমি কুয়ার মাঝে শব্দ ও নড়াচড়া দেখে প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু পরে দেখি এটি আক্রমণ না করে মাথা লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। সবাইকে নিয়ে মাটি খুঁড়ে এটিকে ওপরে নিয়ে আসি। এটি দেখতে খুবই সুন্দর। লোকজন দেখে অনেক আনন্দ পেয়েছে। এর ওজন ৫ কেজি এবং ৪ ফুট লম্বা হবে।’
নালুয়া চা বাগানের শ্রমিক নেতা ও আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের মেম্বার নটবর রুদ্র পাল বলেন ‘এই প্রাণী আমার জীবনেও দেখিনি। আমি জানার পর সবাইকে বলেছি যাতে কেউ এটিকে আঘাত না করে। এটিকে সুস্থ অবস্থায় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
এদিকে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে নালুয়া চা বাগানে উপস্থিত হয়ে বনরুইটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরে সেটিকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ বন বিভাগের ডেপুটি ফরেস্টার রেহান মাহমুদ, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের রেঞ্জ অফিসার আব্দুল মোতালেব ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান কো-ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি আবুল কালাম।
হবিগঞ্জ বন বিভাগের ডেপুটি ফরেস্টার রেহান মাহমুদ জানান, সুস্থ অবস্থায় বনরুইটিকে উদ্ধার করে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গভীর জঙ্গলে অবমুক্ত করা হয়েছে। মুহূর্তের মাঝেই এটি গভীর জঙ্গলে হারিয়ে যায়। প্রাণীটি বিপন্ন। এক সময় চুনারুঘাট উপজেলার পাহাড় ও বনাঞ্চলে এটি প্রচুর পরিমাণ দেখা যেত।
হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড, সুভাষ চন্দ্র দেব জানান, হবিগঞ্জের বনাঞ্চলে এই প্রাণিটির আবাস ছিল। বিশেষ করে ছন ও ঝোপ-জঙ্গলে এগুলো দেখা যেত। এটি প্রাণিকূলে একমাত্র আঁশযুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণি। সারা শরীরে মাছের মতো আঁশের ফাঁকে ফাঁকে থাকে শক্ত লোম। স্বভাবেও অতি অদ্ভুত। কুঁজো হয়ে দুলতে দুলতে চলে, লম্বা লেজ গাছের ডালে জড়িয়ে ঝুলেও থাকতে পারে। বিপদ বুঝলে সামনের দুই পায়ের ভেতর মাথা ঢুকিয়ে লেজ দিয়ে পুরো দেহ ঢেকে বলের মতো করে নেয়। একবার সামনের পা দিয়ে কোনো কিছু আঁকড়ে ধরতে পারলে শক্তিশালী প্রাণিও সহজে এদের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। আর এভাবেই এ নিরীহ প্রাণিটি শত্রুর হাত থেকে আত্মরক্ষা করে থাকে। সারাদিন গর্তে ঘুমিয়ে কাটায় আর রাতে খাবারের খোঁজে বের হয়ে মাটি শুঁকতে থাকে। পিঁপড়ার বাসা বা উঁইপোকার ঢিবির খোঁজ পেলে শক্তিশালী নখের থাবা দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে ফেলে। এরা মাটির নিচে প্রায় ছয় মিটার গর্ত করে বাসা বাঁধে। শীতকাল প্রজনন মৌসুম। সাধারণত একটি বা দুইটি বাচ্চা দেয়।
বিশ্বে ৮ প্রজাতির বনরুইয়ের দেখা মেলে। তারমধ্যে বাংলাদেশে মালয়, ভারতীয় ও চায়না বনরুই ছিল। বর্তমানে চায়না বনরুই ছাড়া অন্য প্রজাতির বনরুইয়ের দেখা মিলছে না। কেননা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পাচার হওয়া স্তন্যপায়ী প্রাণী হচ্ছে বনরুই।
তিনি আরও বলেন, বনরুইয়ের ইংরেজি নাম ‘Pangolin’ চায়না বনরুইয়ের বৈজ্ঞানিক নাম ‘Manis pentadactyla’। দাঁত নেই বলে আগে দন্তহীন স্তন্যপায়ী প্রাণির দলে অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে বর্তমানে এদের আলাদা একটি দল ফোলিডাটার (Pholidata) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার সদস্য একমাত্র বনরুই। হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট ও চট্টগ্রামে এক সময় প্রচুর পরিমাণ বনরুই থাকলেও এখন তেমন একটা দেখা মিলে না। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ পরিষদ (আইইউসিএন) এই প্রাণীকে মহাবিপন্ন প্রাণী হিসাবে চিহ্ণিত করেছে।
পরিবেশ আন্দোলন কর্মী ও বাপার আজীবন সদস্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, হবিগঞ্জের বনাঞ্চল হরেক রকম পাখি এবং বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল হিসাবে পরিচিত। তবে নির্বিবাদে বন উজাড় করার কারণে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ও খাদ্যের সংকটের জন্য অনেক সময় বণ্যপ্রাণী লোকালয়ে চলে আসে। তবে বনরুইটিকে আটক করার পর কেউ এটিকে আঘাত না করার জন্য তাদেরকে তিনি ধন্যবাদ জানান। কারণ বিভিন্ন সময়ে লোকালয়ে আসা প্রাণীকে মেরে ফেলার ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে।
তিনি আরও জানান, বনরুই মাংস ও আঁশের জন্য শিকার করা হয়ে থাকে। কিছু ভণ্ড কবিরাজ বনরুই মেরে দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে তথাকথিত ওষুধ তৈরির নাম করে ব্যবসা ফাঁদছে। বাংলাদেশের মতো চীন এবং ভিয়েতনামেও লোকজ ওষুধ তৈরির জন্য বনরুই ব্যবহার করা হয়। কিডনির রোগ, অ্যাজমা বা রক্ত সঞ্চালন বাড়ানোর জন্য বনরুইয়ের আঁশ দিয়ে কবিরাজি ওষুধ তৈরি করা হয়। যদিও এসব ওষুধের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। হবিগঞ্জের আদালত প্রাঙ্গণে বিভিন্ন সময় বনরুইয়ের তৈল বিক্রি করতে দেখা গেছে। এই প্রাণীটিকে রক্ষা এবং এর ওপর গবেষণার জন্য সরকারীভাবে উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।
- টিসিবির জন্য কেনা হবে সাড়ে ৬১ কোটি টাকার মসুর ডাল
- সিঙ্গাপুর থেকে ২ কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার
- জিআই স্বীকৃতির সঙ্গে পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখতে হবে:শিল্পমন্ত্রী
- সাতক্ষীরায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আরোহী নিহত
- বাগেরহাটে বালু বোঝাই ট্রলির ধাক্কায় মা-ছেলে নিহত
- গুচ্ছভর্তি পরীক্ষা: খুবি উপকেন্দ্রে ৮৮৮৬ পরীক্ষার্থী
- খুলনা যুবলীগ সভাপতির ছাতা পেয়ে নৌকার মাঝিরা খুশি
- খুলনার ১৪৩তম জন্মদিন আজ
- ১৪৩তম খুলনা দিবস পালিত
- হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়ছে আরও তিন দিন
- শপথ নিলেন নবনিযুক্ত আপিল বিভাগের তিন বিচারপতি
- আমার শরীর সুন্দর, তাই তারা পিছু ছাড়ে না : নোরা ফাতেহি
- ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
- গরমে মাথায় হাত মুরগি খামারির, আম চাষিরাও চিন্তায়
- স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত শনিবার
- মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলো ২৮৮ সেনা-বিজিপিকে
- দুবাইয়ের পর এবার মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস
- হজ পারমিট দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব
- উপজেলা ভোট ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে
- নিজেকে এখন প্রাণভরে দেখি : পরীমণি
- বিএনপি আন্দোলনেব্যর্থ হয়ে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে:কাদের
- ১৫ বছরে আমাদের চাল আমদানি করতে হয়নি: এলজিআরডি মন্ত্রী
- এভিয়েশন শিল্পে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- বিএসইসির আদেশ জারি
৩ শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমতে পারবে না - বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ হবে দশ বিলিয়ন ডলার
- ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মে থেকেই অভিযান : মেয়র, ডিএসসিসি
- মডেল ঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ কৃষকের মধ্যে সাড়া
- ব্যাংক একীভূত হলেও আমানত সুরক্ষিত থাকবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
- হজযাত্রীদের সহযোগীতার আশ্বাস সৌদির
- টেলিযোগাযোগ আইনের খসড়া
আইনের আওতায় আসবে সব ধরনের অনলাইন সেবা
- আমি আসলাম আর আপনি চলে যাচ্ছেন: নাসিরকে পরীমনি
- আজ থেকে শুরু ফিরতি ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি
- পায়ুপথে পেটের ভেতর ২৫ ইঞ্চি কুঁচিয়া মাছ, জ্যান্ত উদ্ধার
- ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই একে একে মৃত্যুর কোলে ৪
- ৫০ বছর পর মা-মেয়ের মিলন
- দেশের জনগন সন্ত্রাস দমন ওআইনশৃঙ্খলার উন্নাতি হওয়ায় সুফল ভোগ করছেন
- কেসিসির ৩৭ কর্মচারী চাকরিচ্যুত
- বগুড়ায় সিনেমা হলে টিকিটের সঙ্গে বিরিয়ানি ফ্রি
- শিকলে বেঁধে ২৫ দিন ধরে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ
- ইতিকাফের জন্য যেসব শর্ত মানতে হবে
- ডুমুরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- ভালো শিক্ষার্থী হলেই হবে না, আদর্শবান মানুষ হতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
- ‘অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার সুস্থ আছেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে’
- খুলনায় বাসে তল্লাশি, ১২ স্বর্ণের বারসহ যুবক আটক
- অনলাইনে ঝুঁকছেন ক্রেতারা
- তাপদাহ নিয়ে যা জানালেন হিট অফিসার
- হার্টের ২৩ ধরনের রিংয়ের দাম কমলো
- বিশ্বের সব দেশেই পরকীয়ার অস্তিত্ব আছে...
- স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর আত্মহত্যা
- দাদার সাথে কী কথা হলো মুস্তাফিজের?