চিংড়ি পোনা সরবরাহে তীব্র সংকট, বিপাকে চাষীরা

পাইকগাছা-কয়রায় মৌসুমের শুরুতেই দেখা দিয়েছে চিংড়ি পোনারসংকট। প্রতিনিয়ত ৫ কোটি পোনার চাহিদা থাকলেও মিলছে মাত্র এক থেকে দেড় কোটি। ফলে প্রতিদিন চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থাকছে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ কোটি পোনার। আর সরবরাহ কম থাকায় গত বছরের তুলনায় চলতি বছর পোনার দামও তুলনামূলক অনেক বেশি। বর্তমানে পোনা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন ঘের চিংড়ি চাষীরা। প্রাকৃতিক উৎস থেকে পোনা আহরণ বন্ধ, স্থানীয় হ্যাচারীতে সংরক্ষিত না থাকা, কক্সবাজারের হ্যাচারীর কম সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় মা চিংড়ির অভাবে এ ধরণের পোনা সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট পোনা ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

পাইকগাছার সবুজ মৎস্য খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব ইসতিয়ার রহমান শুভ জানান, মৌসুমের শুরুতেই চিংড়ি পোনা নিয়ে বিপাকে রয়েছি। ঘের প্রস্তুত করার পরও প্রতিদিন যে পোনার প্রয়োজন তা ১০ দিনেও সরবরাহ সম্ভব হয়নি। শুরুতেই এ ধরণের পোনা সংকট থাকলে উৎপাদনের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন সফল এ চিংড়ি চাষী।
খুলনা বিভাগীয় পোনা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক, পুরস্কার প্রাপ্ত চিংড়ি চাষী ও হ্যাচারী মালিক গোলাম কিবরিয়া রিপন জানান, স্থানীয় হ্যাচারী গুলো এখনো সরবরাহ শুরু করতে পারেনি,তার উপর রয়েছে মা চিংড়ির সংকট যার ফলশ্রুতিতে মৌসুমের শুরুতেই চিংড়ি পোনার সংকট দেখা দিয়েছে। বিশিষ্ট এ ব্যবসায়ী বলেন, স্থানীয় ভাবে পাইকগাছায় ৪টি হ্যাচারী রয়েছে। যার মধ্যে দু টির উৎপাদন শুরু করলেও এখনো সরবরাহ করতে পারিনি। কয়রায় দুইটা হ্যাচারীর মধ্যে একটা শুরু করলেও সরবরাহ নেই।

চাহিদার তুলনায় সরবরাহ না থাকায় গত বছর যেখানে প্রতি হাজার পোনা দেড়’শ থেকে ২শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে সেখানে এ বছরের শুরুতেই প্রতি হাজার পোনা ৬ থেকে ৭শ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী পোনার সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে চিংড়ি চাষীরা বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ঠ চিংড়ি চাষী ও পোনা ব্যবসায়ীরা।

এ ব্যাপারে পাইকগাছা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস জানান, পোনা সংকটের বিষয়টি কোন ঘের মালিক এখনো আমাদের অবহিত করেননি। তবে এসপিএফ (রোগ মুক্ত) পোনার চাহিদা বেশি থাকায় সাধারণ হ্যাচারী মালিকদের মধ্যে হয়তো এক ধরণের শঙ্কা কাজ করছে। ফলে হ্যাচারীতে তুলনামূলক পোনা উৎপাদন কম হচ্ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে পোনা সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।