• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

‘গীতিকার সুরকারদের আমরা খোঁজই রাখিনা’

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

বাংলাদেশর অন্যতম জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী প্রীতম আহমেদ। সম্প্রতি দুবাইতে একটি সংগীতানুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানেই তার কর্মব্যস্ততা, বাংলা গান ও সমসাময়িক ভাবনা নিয়ে কথা।

আপনাকে বাংলাদেশের চেয়ে বাইরেই থাকতে দেখা যায় বেশি। বছরের কয় মাস দেশের বাইরে থাকা হয়?

বছরে প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস  দেশের বাইরে থাকা হয়। সেটা কিন্তু বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠানের জন্যই। বাকিটা সময় পরিবারকে দেই এবং গানের রেকর্ডিং ও মিউজিক প্রোডাকশন নিয়ে কাজ করি। 

বছরের কোন সময় কখন-কোথায়  পারফর্ম করেন ?

ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে অনুষ্ঠান বেশি থাকে। তখন বাংলাদেশেই পারফর্ম করা হয়। আর মার্চ ও এপ্রিল মাসে ইউরোপ অঞ্চলে। মে জুন জুলাই মাসে নর্থ আমেরিকায় বেশি অনুষ্ঠান হয়। আমার শিডিউলও এ অনুপাতে গোছানো।

এবার ভিন্ন একটা বিষয় জানতে চাইবো। বাংলাদেশের অনেক জনপ্রিয় গায়কদের দেখা যাচ্ছে শেষ বয়সে এসে আর্থিক সাহায্য চাইছেন। চিকিৎসার খরচের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান। এমনটি কেনো?   

আমাদের দেশের গান যতটা সমৃদ্ধ বাণিজ্যিকভাবে শিল্পীরা ততটা সফল নয়। হাতে গুণা কিছু শিল্পীকে আমরা সচ্ছল বা সফল দেখতে পাই। বাকি গীতিকার সুরকারদের আমরা খোঁজই রাখিনা। আমরা জানিওনা কোনটা কার গান বা কার  কতটা মজুরী প্রাপ্য। অন্যদিকে শিল্পের রীতি হচ্ছে যখনই কোন নতুন শিল্পী আসবে বর্তমান শিল্পীর জনপ্রিয়তা ও মূল্যায়ন কমতে থাকবে। সাথে সাথে তার আয় রোজগারও কমতে থাকবে। তাই আমরা দেখতে পাই অনেক জনপ্রিয় এমন কি জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পীদেরও শেষ বয়সে সরকারি সাহায্য ছাড়া চিকিৎসা হয় না। কারণ, পৃথিবীর সব দেশে যৌবনে শিল্পীরা যা কাজ করেন, শেষ বয়সে তার রয়ালিটি রোজগার দিয়ে চলেন। আমাদের দেশে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শিল্পীদের রয়ালিটি দেন না। আমি এই রয়ালিটি প্রথা বাস্তবায়ন করতে চাই। রয়ালিটি প্রথা নেই বলেই আমাদের শিল্পীদের শেষ বয়সে হাত পাততে হয়। 

শিল্পীদের গানের কপিরাইট নিয়ে আপনার প্রতিবাদের বিষয়টি বিস্তারিত জানতে চাই...

মানুষ ভাবে আমাদের দেশে শিল্পীরা দিন দিন গরিব হয়ে যাচ্ছে। আগের যুগে সিনেমা বা সিডি ক্যাসেটের শিল্পীরা অনেক ভাল ছিল। তখন শিল্পীদের ঠকালেও অর্ধেক পারিশ্রমিক দিলেও প্রযোজকরা তা দিতেন। অন্তত শিল্পীরা জানতেন কে কে কোন কোম্পানি থেকে তার গান বিক্রি করছে। কিন্তু ডিজিটাল মাধ্যম আসার পর শিল্পীরা জানেই না তার এক গান কোন কোম্পানি থেকে বিক্রি করে। আমি এ বিষয়টি নিয়েই কথা বলছি। সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।  

ইউটিউব ও ভার্চুয়াল যুগে বাংলা গানের শ্রোতা ও গান নিয়ে আপনার ভাবনা কি?

এখন বাংলা গানের স্রোতার চাইতে দর্শক বেড়েছে। যে যত কথাই বলুক বিশ্ব সঙ্গীতের বাণিজ্যে আমাদের বাংলা গান এর কোন আমন্ত্রণ বা তৎপরতা নেই। আমাদের ভাষার গানকে এখনও কোন আন্তর্জাতিক স্রোতার বাজারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। দেশের ভার্চুয়াল বাজারে বাংলা সঙ্গীতের বছরে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হলেও শিল্পীদের কাছে তা না পৌঁছে চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্ব ভোগীদের কাছে। ডিজিটাল মাধ্যম নিয়ে আমার বর্তমান প্রত্যাশা যেন বাংলাদেশ সরকার শিল্পীদের অনুদান এর প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে তাদের প্রতি যে অনাচার ও অন্যায় হচ্ছে সেটার ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা