• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

খুলনায় বাস্তবায়িত হচ্ছে স্বপ্নের ভৈরব সেতু

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯  

স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে খুলনার ভৈরব নদের ওপর কাঙ্খিত সেতু। ৭৩৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প শুরু হচ্ছে আগামী জানুয়ারিতে। সাংসদ আব্দুস সালাম মূর্শেদীর একান্ত প্রচেষ্টায় সরকারি অর্থায়নে নির্মিত এই সেতুর মাধ্যমে দিঘলিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, খুলনা মহানগরীর সঙ্গে ভৈরব নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন দিঘলিয়া উপজেলা। এ উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভৈরব নদে সেতুু হবে। খুলনা-৪ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুর পর এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে দশম জাতীয় সংসদে খুলনা-৪ আসনে উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন আব্দুস সালাম মূর্শেদী। নির্বাচিত হওয়ার পর জাতীয় সংসদে প্রথম বক্তৃতায় সংসদ সদস্য বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী তার নির্বাচনী এলাকার সাথে খুলনা শহরের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ভৈরব সেতু নির্মাণের দাবি জানান। একাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পরও একই দাবি উত্থাপন করেন তিনি। এভাবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভৈরব নদের ওপর সেতু নির্মাণের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ১ দশমিক ৩১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মূল সেতুটি হবে নগরীর নগরঘাট থেকে রেলিগেট ফেরিঘাট পর্যন্ত। সেতুর সাথে সড়কের সংযোগ ঘটাতে ফেরিঘাট থেকে নগরীর মহসীন মোড় এবং দিঘলিয়ার নগরঘাট থেকে উপজেলার মোড় পর্যন্ত ফ্লাইওভার বা ভায়াডাক্ট হবে। ইতোমধ্যে প্রাক সম্ভাব্যতা জরিপ, মাটি পরীক্ষা, নদীর স্রোত, নদীর নিচের ভূমি ও মাটির ক্ষয়সহ সব ধরনের পরীক্ষা ও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শেষ হয়েছে নকশা তৈরির কাজও। দীর্ঘদিন বিষয়টি আলোচনা হলেও তেমন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। গত ৪ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রকল্পের কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়। সে প্রেক্ষিতে খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সংশোধিত প্রকল্পটি (ডিপিপি) গত ২৭ অক্টোবর সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। দীর্ঘ যাচাই বাছাইয়ের পর পরিকল্পনা মন্ত্রীর সম্মতির পর আগামী ১৭ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তালিকাভুক্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে উক্ত প্রকল্পটি পাস হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২২ সাল পর্যন্ত। বিভিন্ন পরীক্ষার পর ভৈরব নদের পানি প্রবাহ ও নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সেতুর নকশায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নদী থেকে ৬০ ফুট উঁচুতে পিসি গার্ডার নকশায় সেতুটি নির্মিত হবে।

খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেন, তার নির্বাচনী এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে তিনি এই সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধানমন্ত্রী, সড়ক পরিহণ ও সেতুমন্ত্রী এবং পরিকল্পনা মন্ত্রীসহ অন্যান্যদের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অবশেষে এই দাবি পূরণ হচ্ছে। এর মাধ্যমে খুলনা উন্নয়নের রোল মডেলের আরও একধাপ এগিয়েছে। খুলনাবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত দৃষ্টি থাকায় কোনো ধরনের উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাস বলেন, সেতু নির্মাণ হলে খুলনা নগরীর ওপর মানুষের চাপ কমে যাবে। নদীর ওপারে কলকারখানা স্থাপনসহ বসতি বিকেন্দ্রীকরণ হবে। বিশাল জনগোষ্ঠী সেতু থেকে সুবিধা পাওয়ায় ৭৩৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকেই দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা