• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

খুলনায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২ মার্চ ২০২০  

খুলনার ব্রিজ নির্মাণের কাজকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুরুতর আহত কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাদীউজ্জামান রাসেল (২৮) মারা গেছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে তিনি মারা যান। কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত হাদীউজ্জামান রাসেল কয়রা উপজেলার বায়লাহারানিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার সানার ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়রা উপজেলার বাইলা হারানিয়া গ্রামের আলিম মাদ্রাসার পাশে বাতিকাটা খালের উপর নির্মাণাধীন ব্রিজের ঢালাই কাজ চলছিল। ওই কাজটির দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ আখতারুজ্জামান বাবুর শশুর আয়ুব আলী। কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে রবিবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয়রা শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাদিউজ্জামান রাসেল কয়েকজন নেতাকর্মীসহ ঘটনাস্থলে আসলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় দু’পক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক হাদীউজ্জামান রাসেল এবং ছাত্রলীগ কর্মী ইয়াছিন আরাফাত, রাজু, আব্দুল্লাহ, আবুল হাসান ও সেলিমসহ উভয় পক্ষের ৭-৮জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেলকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর পথে সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় বাগালি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার পাড় বলেন, ব্রিজ নির্মাণের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে গ্রামবাসির সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা রাসেলের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে রাসেল গুরুতর আহত হয়। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাসেল মারা যায়। ওই কাজটি দেখভালের জন্য স্থানীয় সাংসদ আখতারুজ্জামান বাবু রাসেলকে দায়িত্ব দেয় বলে ইউপি চেয়ারম্যান জানান। 

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তুহিন ও মিলন সানা নামে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

কয়রা উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের আওতায় সেতু নির্মাণকাজ করা হচ্ছিল। ২৪ লাখ টাকা দামের ওই কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এইচ এইচ এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. হারুন-অর-রশিদ। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। হারুন-অর-রশিদ বলেন, তাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নিয়ে ওই কাজ করছিলেন কয়রার মনিরুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। তবে কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছিল না বলে দাবি করেন তিনি।
হারুন-অর-রশিদের কাছ থেকে মুঠোফোনের নম্বর নিয়ে কথা হলে এ এম মনিরুজ্জামান দাবি করেন, কাজ–সংক্রান্ত কোনো ব্যাপার নিয়ে ওই ঘটনা ঘটেনি। ওই ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। ওই সেতু নির্মাণে তাঁর কোনো বিনিয়োগ নেই। তিনি শুধু কাজ তদারক করছেন। তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের এক কর্মকর্তা জানান কাজটি খুলনা-৬ আসনের সাংসদ আখতারুজ্জামান বাবু তাঁর নিজস্ব লোক দিয়ে করাচ্ছিলেন। 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা