• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

খুলনাঞ্চলে চিংড়ি শিল্পে করোনার থাবা, আর্থিক ক্ষতির শংকা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২০  

করোনার প্রভাবে খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে চিংড়ি শিল্পে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ শিল্পের সাথে জড়িত কয়েক লাখ চাষি, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে।  
শুরুতে স্থানীয়ভাবে সংকট থাকায় ধারদেনা করে বেশি দামে ঘেরে পোণা ছেড়েছে চিংড়ি চাষিরা। সে হতাশা কাটিয়ে উঠার আগেই উৎপাদিত চিংড়ি বিক্রি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ছেন তারা। করোনার কারণে সব সেক্টরের সাথে চিংড়ি সেক্টরও হুমকির মুখে পড়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এর সাথে জড়িত কয়েক লক্ষ মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বেন বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অর্থনীতিবীদরা। 

সূত্র অনুযায়ি, দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় আশির দশক থেকে কয়েক লাখ চাষি বাণিজ্যিকভাবে চিংড়ি চাষ করে আসছেন। এই অঞ্চলে চিংড়ি চাষ লাভজনক হওয়ায় সাদা সোনা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। যার ফলে দিন দিন চাষির সংখ্যা ও উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এই চিংড়ি শিল্প থেকে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আসে। 

মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, দক্ষিণাঞ্চলের তিন জেলায় এক লাখ ৮৯ হাজার ৮৮ হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হয়। এর মধ্যে খুলনায় ৫৫ হাজার ৩৭৫ হেক্টর, বাগেরহাটে ৬৬ হাজার ৭১৩ হেক্টর ও সাতক্ষীরায় ৬৭ হাজার জমিতে প্রাকৃতিক উপায়ে চিংড়ি চাষ করা হয়ে থাকে। এর সাথে জড়িয়ে আছে প্রায় ১০ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা। বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে সিংহভাগ উৎপাদন করেও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে চাষিরা। যার ফলে এ অঞ্চলে কয়েক হাজার কোটি টাকা আয় কমে যাবে।

স্থানীয় মৎস্য চাষি সমিতির নেতারা বলছেন, দেশে এক ধরনের অচলাবস্থা শুরু হয়ে গেছে। দক্ষিণাঞ্চলের অনেকেই মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। আমরা ঘেরের মাছ বিক্রিও করতে পারছি না। আবার নতুন করে ঘেরে মাছও ছাড়তে পারছি না। ওদিকে পাওনাদাররা টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। 

এদিকে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোটার্স এ্যাসোসিয়েশন খুলনার নেতারা বলেছেন, করোনার কারণে বাইরের কোন দেশেই এ মূহুর্তে চিংড়ি রপ্তানি সম্ভব নয়। এ সংকট না কাটা পর্যন্ত স্থানীয় কোন রপ্তানিকারক এ মুহূর্তে চিংড়ি কিনে শংকার মুখে পড়তে চাইছে না। 

খুলনা মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ দপ্তরের উপ-পরিচালক মজিনুর রহমান জানান, চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে খুলনাঞ্চল থেকে ২ হাজার ৪৬৩ মেট্রিক টন হিমায়িত চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। মার্চ মাসে তা অর্ধেকে নেমে আসে। এরপর আর কোন রপ্তানির তথ্য নেই। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থ বছওে খুলনাঞ্চল থেকে চিংড়ি রপ্তানি হয় ২৯ হাজার ৬ মেট্রিক টন। যা থেকে আয় হয়েছিল ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।  

খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু সাঈদ বলেন, প্রতিকুল অবস্থার মধ্যেও এ অঞ্চলের চিংড়ি চাষিরা তাদের ঘেরে আশানুরূপ উৎপাদন করেছেন। তবে উৎপাদিত চিংড়ি বিক্রি নিয়ে শংকায় পড়েছেন তারা। তিনি আশংকা প্রকাশ করে জানান, করোনার কারণে আন্তর্জাতিক ব্যবায়িক রুট বন্ধ থাকলে ব্যপক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশের চিংড়ি শিল্প। কারণ দেশীয় ক্রেতাদের কাছে এসব চিংড়ি বিক্রি করে কোন চাষি উৎপাদন খরচ তুলতে সক্ষম হবে না।  

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা