• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

কালভার্ট নয় যেন মরণ ফাঁদ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০১৯  

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডস্থ চরটিটিয়া গ্রামে আদ্দীর বাড়ির দরোজার জামে মসজিদের উত্তর পাশে অবস্থিত কালভার্টটি আজ মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। পারাপারে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঢালাই পড়ে যাওয়ায় রডের ওপর সুপারি গাছ দিয়ে সাঁকোর মতো তৈরি করেছেন স্থানীয়রা।

উপজেলার দেউলা ইউনিয়নের মজম বাজার হতে চরটিটিয়া গ্রামে যাওয়ার প্রধান সড়ক এটি। ওই সড়কের আদ্দীরবাড়ি নামক এলাকার জামে মসজিদের উত্তর পাশে খালের ওপর নির্মিত কালভার্টটির ঢালাই নেই, আছে শুধু রড। যেখান দিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং নানা শ্রেণি-পেশার প্রায় ৪ হাজার লোক যাতায়াত করে।ৎ

কালভার্ট পারাপারে প্রতিনিয়তই তারা বিপদে পড়ছেন। বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী, বয়স্ক লোক এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয় বাসিন্দা ফজর আলীর ছেলে আবুল হোসেন (৭৩) জানান, প্রায় ২৮ বছর পূর্বে খালটির উপর কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। এটি অনেক পুরানো হয়ে যাওয়াতে গত ৭ বছর আগে থেকে এর ঢালাই ঝরে পড়া শুরু হয়। যার ফলে আজ এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

কুট্টি মিয়ার ছেলে আ. রশিদ বলেন, আমরা বুড়ো মানুষ হওয়াতে এখান দিয়ে পাড় হয়ে ঠিকমতো মসজিদে যেতে পারি না। এখান দিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে আমি কয়েকবার আহত হই।

তাছাড়া ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা, আ. মতলেবের ছেলে মোছলেম (৬৫), কয়ছর মিয়ার ছেলে নান্নু (৪৫), কালামের ছেলে ইয়াছিন (৫৩), পার্শ্ববর্তী মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল সহ আরও অনেকে জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কালভার্ট এ অবস্থার কারণে আমাদের ভোগান্তি চরমে।

জানা গেছে কোরবানির ঈদে একটি গরু এখান থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙ্গে যায়। পরে উদ্ধার করে সেটি জবাই করা হয়। এখানে প্রতিনিয়তই কোন না কোনো দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে।

তারা আরও জানায়, এলাকার কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে আমাদের অনেক বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। রাস্তা এবং কালভার্ট খারাপ থাকায় এখানে কোনো গাড়ি আসতে পারে না। রোগীকে কাধে করে নিতে হয়।

তবে সবচেয়ে ভোগন্তিতে আছেন এখানকার স্কুল,কলেজ এবং মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। এদের মধ্যে লালমোহন শাহবাজপুর সরকারি কলেজে অধায়ণরত এইচএসসি ১ম বর্ষের ছাত্র সোহাগ বলেন, 'প্রায় ১ মাস আগে এখানে পড়ে পায়ে প্রচণ্ড আঘাত পাই।'

এছাড়া একই এলাকার ৭ম শ্রেণীর ছাত্র লোকমানের ছেলে তানজিল,৩য় শ্রেণিতে পড়া সবুজ ও স্বপ্না এবং ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র ফজলে রাব্বি বলেন, 'আমরা প্রতিদিন স্কুল মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় ও আসার সময় এখানে এসে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় থাকি। তাই সকালে বাড়ি থেকে আসার সময় আব্বা আম্মা পার করেন দেন। আবার ছুটির পর অন্যের সহায়তার পার হয়ে থাকি।'

ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, 'সত্যি এটি একটি মরণফাঁদ। কালভার্টটি দুটি গ্রামের মধ্যস্থলে হওয়ায় এটার দিকে তেমন খেয়াল নেওয়া হয়নি।'

দেউলা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবুল মুঠোফোনে বলেন, 'আমি কয়েকদিন যাবৎ খুব অসুস্থ। এব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কেউ আমাকে বলেনি।'

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা