• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

কর্মস্থল যখন নারীর হৃদরোগের কারণ!

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০১৯  

মানসিক চাপ আমাদের সবাইকেই প্রভাবিত করে। বিশেষ করে, আমাদের হৃদপিণ্ডের সমস্যা সৃষ্টিতে এটি বেশ বড় ভূমিকা পালন করে। তবে সম্প্রতি চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন যে, অন্যসব মানসিক চাপের চাইতে একটি বিশেষ ধরনের মানসিক চাপ একজন মানুষকে অনেক বেশি অসুস্থ করে দেয়। 

হৃদপিণ্ডের সমস্যা থেকে শুরু করে অন্যান্য নানারকম সমস্যার জন্ম দেয় এই মানসিক চাপ। একজন মানুষের, বিশেষ করে নারীদের স্ট্রোক করার পেছনে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। আর সেটি হলো কর্মস্থল ও পরিবার- দুটো স্থানকে একই রকমভাবে মানিয়ে চলার মানসিক চাপ। চলুন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক- 

 হৃদরোগ এবং কর্মস্থলের চাপ : কতটা সম্পর্কযুক্ত?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্যানুসারে, বর্তমান সময়ে মানুষ সবচাইতে বেশি মৃত্যুবরণ করছে হৃদরোগের কারণে। এই হৃদরোগের পেছনে স্থুলতা, খাবার এবং শরীরচর্চা কারণ হিসেবে কাজ করে, এটা সবার জানা। তবে সম্প্রতি গবেষকেরা মনোযোগ দিয়েছেন মানসিক চাপের ওপরে। 

সম্প্রতি ব্রাজিলের বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পেশা থেকে আসা ৩৫-৭৪ বছর বয়সী মোট ১১ হাজার মানুষের ওপরে জরিপ চালান তারা। আর এই জরিপে দেখা যায় এক অন্যরকম তথ্য। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করা হয়। এর পর তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, পরিবারের প্রভাব কতটা তাদের কর্মস্থলে এবং কর্মস্থলের প্রভাব কতটা তাদের পরিবারে পড়ছে।

এ ক্ষেত্রে কর্মস্থলের ব্যাপারে তারা একইরকম মানসিক চাপের কথা বললেও পরিবারে এই চাপের অভিজ্ঞতা ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। পুরুষেরা পরিবারে নিজেদের কাজের পাশাপাশি বিশ্রামের যথেষ্ট সময়ের কথা বললেও নারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর উল্টোটা জানান। শুধু কর্মস্থলে নয়, পরিবারেও মানসিক চাপে ভোগেন তারা। আর দেখা যায় যে, যেসব নারীর পারিবারিক চাপ কিছুটা কম, তাদের হৃদপিণ্ডের অবস্থাও তুলনামূলকভাবে ভালো। 

মজার ব্যাপার হলো, কিছুদিন আগে একইভাবে কর্মস্থলের প্রভাব মানুষের ওপরে কতটা পড়ে সেটা নিয়ে গবেষণা চালানো হয়েছে এবং সে সময় নারী ও পুরুষ এই প্রভাব এবং মানসিক চাপ একইরকম বলেছেন। মানসিক চাপের প্রভাবটাও একই পড়েছে। কিন্তু এবার সেখানে এসেছে ভিন্নতা। গবেষকদের মতে, নারীরা এখনো তাদের লিঙ্গভিত্তিক যে কাজ সেটাকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেননি। 

পুরুষেরা সাহায্য করার ক্ষেত্রে এগিয়ে এলেও তার পরিমাণ সবখানে সমান নয়। তাই, পরিবার এবং কর্মস্থল- দুটো স্থানেই মানসিক চাপে থাকতে হয় তাদের। ভারসাম্য রাখার চেষ্টা তাদের জন্য এ ক্ষেত্রে আরও বেশি সমস্যা তৈরি করে। 

এই সমস্যা থেকে কীভাবে দূরে থাকা সম্ভব? চিকিৎসকেরা মানসিক চাপ কমানোর ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি। তাদের মতে, এই চাপ কমানোর বদলে সেটা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। হতে পারে, পুরুষ এবং নারী যদি এই চাপটুকুকে ভাগ করে নেয় তাহলে ব্যাপারটির সমাধান হয়ে যায়। তবে অন্যদিকে, মানসিক সাহায্য নিয়ে, যোগব্যায়াম এবং অন্যান্য কিছু পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমেও মানসিক এই চাপ কমিয়ে আনা যায়।

গবেষণায় এই সন্দেহ থেকেই যায় যে, মানুষ নিজেদের মানসিক চাপ নিয়ে সত্যি বলছে কি না। অনেকে নিজেদের ব্যাপারে একটু বাড়িয়ে বলতে পছন্দ করেন। তবে শারীরিক পরীক্ষায় উঠে আসা তথ্যগুলো তাদের কথার সত্যতা প্রমাণ করছিল। 

এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতে, হৃদপিণ্ডের যে কোন সমস্যাকে অনেকটা কমিয়ে আনতে তাই নিজের মানসিক শান্তির দিকে নজর রাখুন। হয়তো পরিবারে অনেক মানসিক ও কাজের চাপে থাকছেন আপনি। কর্মস্থলেও চাপটা একইরকম। তবে কিছুটা খেয়াল রাখলে, নিজেকে একটু বাড়তি সময় দিলে এই অবস্থা থেকে সহজেই উৎরে যেতে পারবেন আপনি। 

তাই, ভারসাম্য বজায় রাখতে গিয়ে নিজেকে মানসিক অশান্তি না দিয়ে ভাবুন, কাজগুলোকে ভাগ করে নিন। প্রয়োজনে অন্য কারো সাহায্য নিন। নিজের জন্য ভাবুন। এতে করে মানসিক ও শারীরিক- দুইভাবেই সুস্থ থাকবেন আপনি। 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা