• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে খুলনায়

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১০ মার্চ ২০২০  

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে খুলনায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জনসাধারণকে জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন ইউনিট স্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অনুষ্ঠিত সচেতনতামূলক সভায় এ তথ্য জানানো হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে শিক্ষার্থীদের সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা দরকার। তিনি এ সময় অযথা জনসমাবেশ না করা এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতা বাড়াতে মাইকে প্রচারের পরামর্শ দেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা জানান, সম্ভাব্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের পরিচর্যায় বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে যথাক্রমে তিনশ, দুইশ ও একশ শয্যার কোয়ারেন্টাইন (পৃথক করে রাখা) ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় যথাক্রমে দুইশ, দশ ও পাঁচ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট (পৃথক রেখে নিবিড় পরিচর্যা) স্থাপন করা হয়েছে। জনসাধারণকে জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি দেশে পানি সহজপ্রাপ্য হওয়ায় সবাইকে বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুতেও পরামর্শ দেন বিভাগীয় পরিচালক। 

এছাড়া একান্ত দরকার না হলে দেশের বাইরে না যাওয়া ও বিদেশ থেকে আসাদের ১৪ দিন নিজের বাড়িতে আলাদা কক্ষে অবস্থানের অনুরোধ জানান তিনি। 

রাশেদা সুলতানা জানান, রোগে আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে ডাক্তারের পরামর্শে বিশ্রাম, বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়া ও জ্বর নিয়ন্ত্রণের ওষুধ সেবন করলে করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব।

খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ড. মু আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, শিশুদের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক কম। আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এ ভাইরাস থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

ঘনবসতির বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে অধিকতর নজরদারির দাবি জানিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের পরিচালক এটিএম মনজুর মোর্শেদ বলেন, এ ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। তবে এতে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুহার তিন শতাংশের কম। স্বাস্থ্যসেবা দেওয়াকারী চিকিৎসক ও নার্সদের সুরক্ষা উপকরণ অধিক পরিমাণে মজুদ ও সরবরাহের পরামর্শ দেন তিনি।

সভায় শ্বাসতন্ত্রের রোগ সৃষ্টিকারী করোনা ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দেওয়া, অপ্রয়োজনে চোখ-নাক-মুখে হাতের স্পর্শ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্য কারো সঙ্গে হাত মেলানো বা আলিঙ্গন পরিহার করার পাশাপাশি অসুস্থ পশুপাখির সংস্পর্শে না যেতে জনসাধারণকে আহ্বান করা হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন ওয়াজ মাহফিল বা নামযজ্ঞের মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সামাজিক অনুষ্ঠানসমূহ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দূর হওয়ার পর আয়োজনের জন্য সর্বসাধারণকে পরামর্শ দিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিদের্শ দেন। জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এমন অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রচারে গণমাধ্যমকে সচেতন থাকতে অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এহসান শাহ, প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর কবীরসহ জেলা প্রশাসন ও অন্য দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা