• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

‘করোনা আতঙ্ক’ নয়, প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি মানুষের পাশেই আছেন

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২০  

করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এ মুহুর্তে সরকারের পাশাপাশি প্রয়োজন সাধারণ মানুষকে আরো বেশী সচেতন হওয়া। একই সাথে করোনা নিয়ে বিশেষ ফায়দা লুটতে মহল বিশেষের গুজব ও অপপ্রচার রুখে দেয়ার দায়িত্বও রয়েছে জনসাধারণের। সর্বোপরি মনে রাখতে হবে, আপদকালীন এ মুহুর্তে সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি মানুষের পাশেই রয়েছেন।

কেন আপনি কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন : বিদেশ ফেরত প্রতিটি নাগরিকের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকাটা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। আপনি যদি করোনার বাহক হয়ে থাকেন, তবে আপনার মাধ্যমে আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ আশেপাশের মানুষ করোনা আক্রান্ত হতে পারে। তাই নিজ দায়িত্বেই আপনাকে কোয়ারেন্টাইনে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে, সরকার হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সব ধরণের ব্যবস্থা রেখেছে।

দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি : প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোসহ  বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যেভাবে করোনা আঘাত হেনেছে, আগাম প্রস্তুতি থাকায় বাংলাদেশে করোনা সেভাবে আঘাত এখন পর্যন্ত হানতে পারেনি। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে এ যাবত দুইজন করোনা আক্রান্ত মারা গেছেন। ২৪ জন করোনা রোগী রয়েছেন। যাদের পূর্ণ চিকিৎসা চলছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইনে কয়েক হাজার সন্দেহভাজনকে বিশেষ নজরদারীতে রাখা হয়েছে। তাই সাধারণ মানুষের করোনা নিয়ে আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

সরকারের উদ্যোগ সমূহ : জেলা উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে পৃথক বেড রাখা হয়েছে। করোনার লক্ষণ দেখা দিলে হট লাইন খোলা হয়েছে। রাজধানীতে করোনা রোগীদের জন্য ৪টি হাসপাতাল বরাদ্দ রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস শনাক্ত করার জন্য আগামী দুই দিনের মধ্যেই আসছে দুই হাজার কিট। এছাড়া চীন সরকার কাছ থেকে আসছে আরো ১০ হাজার কিট, ১৫ হাজার সার্জিকেল মেডিকেল মাস্ক ১০ হাজার মেডিকেল প্রটেকটিভ ড্রেস এবং ১ হাজার ইনফারেড থার্মোমিটার। বিদেশ থেকে যারা আসছেন তাদের তালিকা ঠিকানাসহ জেলাপ্রশাসকদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন আগত প্রবাসীদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইন রাখার ব্যবস্থা করছেন। যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার আইন ভঙ্গ করছেন তাদেরকে জরিমানাও করা হচ্ছে। যাদের শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তাদেরকে আশকোনা হাজিক্যাম্পসহ নিরাপদ স্থানগুলোতে রাখার ব্যবস্থা করেছে। স্কুল কলেজগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের অফিসিয়ালি চিঠি দিয়ে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।  ইউরিপিয়ান দেশগুলোর সব ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে। গাইডলাইন, জনসচেতনতামুলক ক্যাম্পেইন সরকারের পক্ষ থেকে মিডিয়াতে প্রচার করা হচ্ছে। জেলা, উপজেলা পর্যায়ে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো আবাসিক হোটেলে বিদেশি থাকলে সাথে সাথে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাদের হাঁচি, কাশি,জ্বর তাদেরকে জুমা’র নামাজে শামিল না হবার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চাল, ডালসহ নিত্যপন্যের বাজার স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকরা ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা এবং কেউ যেন নিত্যপন্যের বাড়তি দাম আদায় করতে না পারে সে লক্ষ্যে বাজার মনিটরিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা-উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তৎপর রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের মনিটরিং, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, স্কুল ও কোচিং বন্ধ রাখা এবং বাজার ব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখার নিমিত্ত প্রত্যেক উপজেলায় টাস্কফোর্স টিম অভিযান পরিচালনা করছে।

সাধারণ মানুষের কর্তব্য : করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। প্রবাসীরা কেউ কোয়ারেন্টাইনে না গেলে তা স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে। করোনার লক্ষণ প্রকাশ পেলে নিকটস্থ হাসপাতালে দ্রুত যোগাযোগ করতে হবে। কোনো ধরণের গুজবে কান দেয়া যাবে না। চিকিৎসা করলে করোনা ভালো হয়। তাই ভীত না হয়ে করোনার চিকিৎসা নিতে হবে। কোনো প্রকার অপচিকিৎসা গ্রহণ করা যাবে না। সর্বক্ষেত্রে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করতে হবে। 

এদিকে, করোনা নিয়ে দেশের সর্বশেষ অবস্থা রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে অবহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার বঙ্গভবনে তিনি রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাত করেন। সাক্ষাৎকালে তারা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। 

রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণকে করোনায় আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।।

 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা