• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

এসএ গেমস : কারাতের ২৫০ টাকার কোচ তেসুরো কিতামুরা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

এসএ গেমসে আজ কারাতের সোনায় মোড়ানো দিন ছিল। দুপুরের আগেই তিন-তিনটি সোনা জিতে নেয় তারা। ছেলেদের ব্যক্তিগত কুমির অনূর্ধ্ব-৬০ কেজি ওজন শ্রেণিতে মো. আল-আমিন সোনা জিতেন। এরপর মেয়েদের ব্যক্তিগত কুমির অনূর্ধ্ব-৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে সোনা জিতেন মারজানা আক্তার প্রিয়া। আর মেয়েদের ব্যক্তিগত কুমির অনূর্ধ্ব-৬১ কেজি ওজন শ্রেণিতে সোনা জিতেন হুমায়রা আক্তার অন্তরা।

আগের দিন জিতেছিল দুটি রৌপ্য ও ৭টি ব্রোঞ্জ। আজ জিতেছে ৩টি স্বর্ণ ও ৩টা ব্রোঞ্জ। দুইদিনে ৩টা স্বর্ণ, ২টা রৌপ্য ও ১০টা ব্রোঞ্জ জিতেছে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত যা চলমান এসএ গেমসে নির্দিষ্ট কোনো ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ জাতীয় কারাতে দলের প্রধান উপদেষ্টা কোচ জাপানি তেসুরো কিতামুরা। তিনি গেল ৩৩ বছর ধরে বাংলাদেশের কারাতের সঙ্গে আছেন। কিন্তু বেতন নেন না। এক প্রকার বিনা পারিশ্রমিকে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের কারাতের উন্নয়নে। তাকে বাংলাদেশের আধুনিক কারাতের রূপকারও বলা হয়।

আজ কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বাংলাদেশেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চান। বাংলাদেশের সঙ্গে তার কাজ করার স্মৃতিচারণ করে তেসুরো কিতামুরা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে প্রথম এসেছিলাম ১৯৮৫ সালে। দুই বছর বাংলাদেশে কাজ করার পর জাপান ফিরে যাই। অন্য দেশে কোচ হিসেবে কাজ করি। এরপর আরো চারবার এসেছি বাংলাদেশে। ২০০০ সালে একবার। ২০০৪ সালে একবার। ২০০৬ সালে এবং সবশেষ ২০১৮ সালে। আমি এখন বাংলাদেশের একেবারে থেকে যেতে চাই। সামনে আমার পরিবার নিয়ে আসব। বাংলাদেশেই আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চাই।’

বাংলাদেশের জন্য বিনা পারশ্রমিকে কাজ করছেন তিনি। কেন করছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি কারাতের মানুষ। বাংলাদেশের সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক দিনের। বাংলাদেশকে ভালো লাগে। বাংলাদেশের মানুষকে ভালো লাগে। আমাকে অন্যান্য প্রধান উপদেষ্টা কোচদের মতো বেতন না দিলেও আমার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে ফেডারেশন। আর মাঝে মাঝে কিছু বেতনের ব্যবস্থা করে। যেমনটা সাধারণ সম্পাদক বলেছেন দৈনিক ২৫০ টাকা করে।

তার বিষয়ে বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবু ক্য শৈ হ্লা বলেন, ‘আমরা এনএসসি থেকে অনুমোদন নিয়ে তাকে প্রধান উপদেষ্টা কোচ হিসেবে রেখেছি। বলতে গেলে বিনা বেতনে। সামান্য বেতন দিই। দৈনিক ২৫০ টাকা করে। সেটাও ক্যাম্প চলাকালিন দিয়েছি সম্মানি ভাতা হিসেবে। কিন্তু তিনি আমাদের এক প্রকার ফ্রি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ওনার কাছে আমরা ঋণী। অন্যান্য কোচরা যেরকম বেতন পায় সেরকম দিতে পারছি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা খুবই সৌভাগ্যবান যে তার মতো একজন কারাতে অন্তঃপ্রাণ কোচ পেয়েছি। মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত কিতামুরা আমাদের এখানে থেকে যাবেন তেমনই প্রত্যাশা করছি। বাংলাদেশের কারাতের আধুনিক ডেভেলপমেন্টটা তিনিই করেছেন। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক কারাতের রূপকার।’

জাপানিরা যে জাতি হিসেবে অন্যরকম সেটা তেসুরো কিতামুরার মতো লোকদের দেখলে বোঝা যায়।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা