• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প সংশোধনে উপকৃত হবে আড়াই লাখ মানুষ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

সরকার তৃতীয়বারের মতো আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। মূলত কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করতেই এ প্রকল্প সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। প্রকল্পটি সংশোধন হলে ওই অঞ্চলের ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন সম্ভব হবে। আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে উপকারভোগীদের দারিদ্র্য বিমোচন এবং উপকারভোগীদের ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা হবে। প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনী প্রস্তাবটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এটি করতে হলে বিমানবন্দরের সীমানা বাড়াতে হবে। আর সীমানা বাড়াতে হলে আশপাশের জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ওই এলাকার বাসিন্দারা। সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে কক্সবাজারের খুরুশকুল মৌজায় পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যেই ১৩৯টি পাঁচতলা আবাসিক ভবন ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই কার্যক্রমের মধ্যে ২০টি ভবন আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর সংশোধনী প্রকল্পের আওতায় করা হবে। বাকি কাজ পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে করা হবে। এমতাবস্থায় খুরুশকুলের বাকি কাজ আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, পিডব্লিউডি, এলজিইডি ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সর্বশেষ রেট শিডিউলের কারণে প্রকল্পের অবশিষ্ট নির্মাণকাজের ব্যয় এবং প্রকল্পের মেয়াদ তিন বছর বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে প্রকল্প পরিচালন ব্যয় বাড়ানোর জন্য তৃতীয় সংশোধিত ডিপিপি প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্পটি ২০২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এর জন্য মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৮২৬ কোটি ১৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। এরমধ্যেই প্রকল্পের অনুকূলে ১ হাজার ১৬৯ কোটি ১৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। 

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-তে চলমান বিনিয়োগ প্রকল্প তালিকায় ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। 

পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেওয়া প্রকল্প প্রস্তাব থেকে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় মোট ২ লাখ ৫০ হাজার ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায় দরিদ্র পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য ৩ হাজার ৯৫০টি পাকা ব্যারাক, চরাঞ্চলে ৫ হাজার ৪০০টি সিআই শিটের ব্যারাক, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ৫ হাজার ২৭০টি সেমিপাকা ব্যারাক, নিজ জমিতে ৩ হাজার ৭১০টি সেমিপাকা ঘর, ১ লাখ ৬৬ হাজার ২৯০টি সিজিআই শিটের সিঙ্গেল ঘর, খুরুশকুলে ২০টি ছয়তলা ভবন, বিভাগীয় সদর ও জেলা সদর, উপজেলা সদর, পৌরসভা এলাকায় ৫০টি বহুতল ভবন, ৯০০টি কমিউনিটি সেন্টার ও ৫৩৯টি পাকা ঘাটলা, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ২০টি টং ঘর এবং ৫৮০টি বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ করা হবে। ১৪ হাজার ৮৯০টি অগভীর এবং ১ হাজার ৩৮১টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হবে। এর বাইরেও সুফলভোগীদের দক্ষতা বাড়ানো, আত্মকর্মসংস্থানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং ৮০ হাজার জনকে সমবায় ঋণ দেওয়া হবে। আর কক্সবাজারে বিমানবন্দর সম্প্রসারণে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদেরও পুনর্বাসন করা হবে এই প্রকল্পের আওতায়। এ কারণেই প্রকল্পটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানিয়েছেন, প্রকল্পটির আওতায় গৃহহীন, ভূমিহীন, ছিন্নমূল, অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসনের মাধ্যমে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা হচ্ছে। দেশের সার্বিক দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বিধায় প্রকল্পটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজি’স-এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বিধায় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি একনেক অনুমোদন করেছে। 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা