• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

আরও এক ধাপ এগোল মেট্রোরেলের কাজ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০১৯  

আরও একধাপ এগিয়ে গেল মেট্রোরেল নির্মাণ। নগর জীবনে গতি আনতে নেওয়া এ প্রকল্পের স্টেশন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। উত্তরার দিয়াবাড়িতে বসানো হয়েছে প্রথম স্টেশনের পরীক্ষামূলক কাঠামো (মক-আপ)। স্টেশন নির্মাণের মূল উপাদানে তৈরি এই কাঠামোর যাচাই-বাছাই চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত। মূল স্টেশন বসানো শুরু হবে জানুয়ারিতে।

উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রথম দফায় যে মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে মোট ১৬টি স্টেশন থাকবে। প্রতিটি স্টেশনের দৈর্ঘ্য হবে ১৮০ মিটার। এর প্রস্থ ২৪ দশমিক ৫ মিটার এবং উচ্চতা ১০ হবে মিটার। সম্পূর্ণ স্টিলের কাঠামোয় এসব স্টেশন তৈরি হবে। এর মধ্যে ৯টি স্টেশন নির্মাণের কাজ এককভাবে পেয়েছে ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি। তিনটি স্টেশনের কাজ যৌথভাবে পেয়েছে টেকেন-আব্দুল মোনেম লিমিটেড ও অ্যাবেনিক্কো। আর বাকি চারটি স্টেশনের কাজ যৌথভাবে পেয়েছে এসএমসিসি ও ইটালিয়ান থাই। ইটালিয়ান-থাই কোম্পানির এককভাবে পাওয়া স্টেশনগুলো বানানোর দায়িত্ব পেয়েছে দেশি কোম্পানি ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্ট লিমিটেড। ম্যাকডোনাল্ড স্টিলই দিয়াবাড়িতে প্রথম স্টেশনের পরীক্ষামূলক এই কাঠামো বসিয়েছে।

ম্যাকডোনাল্ড স্টিলের সংশ্নিষ্ট প্রকৌশলী মো. আবিদ হোসেন বলেন, ইতালিয়ান থাই কোম্পানি এবং আব্দুল মোনেম লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে ম্যাকডোনাল্ড স্টিল মেট্রোরেলের ১২টি স্টেশন স্থাপনের কাজ করছে। ইতোমধ্যে ছয়টি স্টেশনের প্রয়োজনীয় কাঠামো তৈরি শেষ হয়েছে, যা কোম্পানির গাজীপুরের কারখানায় রয়েছে। বাকি স্টেশনগুলোর কাঠামো তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি হয়েছে এবং তৈরির কার্যক্রম চলমান। বর্তমানে মক-আপ বসানো হয়েছে। মূল স্টেশনে যেসব উপাদান ব্যবহার করা হবে, সেগুলো দিয়েই এই মকআপ তৈরি করা হয়েছে। এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। এরপর সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী মূল স্টেশনগুলো বসানো হবে। ম্যাকডোনাল্ড স্টিল এ ধরনের কাঠামো তৈরিতে দেশে সুনাম করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের আরেক অগ্রাধিকার প্রকল্প পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা, যশোরের শেখ হাসিনা আইটি পার্ক এবং সিলেটের হাইটেক পার্ক নির্মাণ করেছে ম্যাকডোনাল্ড স্টিল।

২০১২ সালের ডিসেম্বরে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে পল্লবী-রোকেয়া সরণি-খামারবাড়ি হয়ে ফার্মগেট- সোনারগাঁও হোটেল-শাহবাগ-টিএসসি-দোয়েল চত্বর-প্রেসক্লাব-পল্টন-মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটারের এই মেট্রোরেল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। তবে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। পুরো প্রকল্পটি আটটি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একেকটি প্যাকেজে একেক ধরনের কাজ করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি বেশ ভালো। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পিলার নির্মাণের শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ৩৯৩টি পিয়ারের মধ্যে ৩০৩টি পিয়ার নির্মাণ শেষ হয়েছে। স্টেশনের ১০৮টি আই গার্ডারের মধ্যে ৯৬টি নির্মাণ শেষ হয়েছে। এখন শুরু হলো স্টেশন নির্মাণের কাজ।

জানা গেছে, এ প্রকল্পের ডিপো এলাকার ভূমি উন্নয়ন কাজের প্রথম প্রকল্পটি গত জানুয়ারিতে শেষ হয়েছে। একই কাজের অপর প্রকল্পের অগ্রগতি ২৫ ভাগ। ডিপো এলাকার বিভিন্ন ভবন নির্মাণ, ওয়ার্কশপ, শেড, ইয়ার্ড নির্মাণ কাজের অর্ধেক শেষে হয়েছে। প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকার বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, টেলিফোন লাইন স্থানান্তর শেষ হলেও ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম বাস্তবায়নে নেওয়া প্যাকেজের কাজ শুরু হয় গত জুলাইয়ে। প্রকল্পটির অষ্টম প্যাকেজ হচ্ছে রেলকোচ ও ডিপো ইক্যুইপমেন্ট কেনা। রেল ট্রাক ও বিদ্যুৎলাইন বসানো এবং সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনের অনেক বাকি। ফলে উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার যে পরিকল্পনা তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে মনে করে আইএমইডি।
 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা