• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

‘অভিনেতা পরিচয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি’

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

টনি ডায়েস। একসময়ের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা, বাচিকশিল্পী। দীর্ঘদিন আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯৯৪ সাল থেকে চার শতাধিক নাটক, সিরিয়াল আর টেলিফিল্মে কাজ করেছেন তিনি। তার অভিনীত চলচ্চিত্র ‘পৌষ মাসের পিরিত’ ও ‘মেঘের কোলে রোদ’। এছাড়া তিনি অভিনয় করেছেন ধারাবাহিক নাটক ‘টমটম’, ‘ভূতের গলি’, ‘ছায়াবৃতা’ প্রভৃতিতে। টনি ডায়েস পরিচালিত নাটক ‘পুরো রাত আর অর্ধেক চাঁদ’। ‘লাস ভেগাস’ নামে একটি মার্কিন টিভি সিরিয়ালেও অভিনয় করেছেন টনি ডায়েস। সম্প্রতি মুঠোফোনে কথা হলো এই গুণী অভিনেতা সঙ্গে। সেই আলাপচারিতার উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো :

কেমন আছেন?

ভালো আছি। এখন নিউইয়র্কে গরমটা চলে যাচ্ছে। একটা ঝিরঝিরে বাতাস বইছে, শরতের আশু আগমন বোঝা যায়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।

আপনি যুক্তরাষ্ট্রের কোথায় আছেন? ওখানে কত দিন হলো?

আমি নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে নামের একটা জায়গায় থাকি। সেটা আটলান্টিকের পাড়ে। এখানে প্রায় দশ বছর হলো।

এখন কী করছেন?

এখানে আমি প্রফেশনালি আমেরিকান হোন্ডাতে আছি। এটা একটা ডিলারশিপ প্রতিষ্ঠান। এখানে আমি প্রিয়ন ডিপার্টমেন্টে সার্টিফাইড ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছি। হিলসাইট হোন্ডা আমেরিকার শীর্ষ ১০টি গাড়ি ডিলারশিপের একটি।

আপনার স্ত্রী প্রিয়া তো নৃত্যশিল্পী। সংসার সামলানোর পর কি এখনো তিনি নাচে সময় দেন?

হ্যাঁ, প্রিয়া খুব ভালো নৃত্যশিল্পী। ছোটবেলা থেকেই সে নাচত। আমারও নাচের প্রতি একটা দুর্বলতা আছে সবসময়। আমি নাচকে ভালোবাসি। তাই নৃত্যশিল্পীদের প্রতিও আমার শ্রদ্ধাবোধ আছে। বাংলাদেশে থাকাকালে প্রিয়া নাচের পাশাপাশি উপস্থাপনাও করত। বেশকিছু নাটকেও অভিনয় করেছিল। বিয়ের পর আমি তাকে সবসময় বলেছি, নাচটা ছেড়ো না। আমেরিকাতে আসার পর এখনো নাচটা কন্টিনিউ করছে। আমাদের বাসায় নাচের স্কুল আছে। ছোট ছোট শিশুরা তার কাছে নাচ শিখতে আসে।

আপনার মেয়ে অহনার গান ও অন্যান্য বিষয়ে জানতে চাই?

অহনা খুব চমত্কার একটা মেয়ে। ও পাঁচ বছর বয়সে আমেরিকাতে আসে। এদেশে শিশুদের জন্য অনেক সুযোগ থাকে। বিশেষ করে স্কুলগুলোতে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটিস থাকে। ছোটবেলা থেকেই তার গানের প্রতি একটা ঝোঁক ছিল। তার কণ্ঠের মধ্যে একটা বলিষ্ঠ ব্যাপার আছে। খুব স্ট্রং একটা কণ্ঠ। গানকে ভালোবাসলেও কখনো সে সিরিয়াসলি নেয়নি। তাই সে শখে গান করে। তবে হাই স্কুলে পড়ার সময়েই ভিডিও মেকিং, ক্যামেরা চালানোতে তার খুব আগ্রহ ছিল। সেখানকার ভিডিও ক্লাবের প্রেসিডেন্টও ছিল।

অভিনয় থেকে দূরে সরলেন কেন?

অভিনয় থেকে আমি কখনোই দূরে সরতে চাইনি এবং চাইও না। সবসময় অভিনয়ে থাকতে চাই। এটা আমার রক্তের মধ্যে আছে। শুরুটা মঞ্চ থেকে হয়েছে। তারপর টেলিভিশন। দুই মিডিয়াতেই আমি অভিনয় করেছি। পরবর্তীতে দুটো চলচ্চিত্রে আমি অভিনয় করেছি। সে দুটোর পরিচালক ছিলেন নার্গিস আকতার। এখনো আমি অভিনয় থেকে সরতে চাই না। তবে সে সুযোগটা কেন জানি ব্যাটে বলে মিলছে না। বাংলাদেশের নাটকে অভিনয় করতে হলে সেখানে গিয়ে কাজটা করতে হয়। সে সুযোগটা কম থাকে পেশাগত কারণে। তবে অনেক পরিচালক এখানে আসে কাজের অফার নিয়ে তখন তাদের সঙ্গে কাজ করি। এটা আমার ভালো লাগে। বিশেষ করে নিউইয়র্কে কাজ করার সুযোগটা বেশি। এখানকার মেয়র শুটিংয়ের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকেন।

অভিনেতা, আবৃত্তিশিল্পী ও বর্তমানের কর্পোরেট লাইফের মধ্যে কোন পরিচয়টা আপনার ভালো লাগে?

সবগুলো পরিচয়ই আসলে ভালো লাগে। তবে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে অভিনেতা পরিচয়টা। কর্পোরেট লাইফ সবসময়ই ছিল। অভিনেতা পরিচয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

যতটুকু জানি সাংস্কৃৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেই যুক্ত আছেন। গত ২৭ ও ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত ‘আনন্দ মেলা’ সম্পর্কে বলুন।

আমেরিকাতে আসার পর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক শোগুলোর সাথে জড়িত আছি। তবে কোনো সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সরাসরি জড়িত নেই। যেহেতু শোবিজের মানুষ আমি, তাই বিভিন্ন শোয়ের অফার এলে সেগুলোতে অংশগ্রহণ করি। প্রিয়া কোরিওগ্রাফি করে। অভিনয় থাকলে সেটা করি। উপস্থাপনা করি। অবসরে কাজগুলো করতে ভালো লাগে। লস অ্যাঞ্জেলসে গত ২৭ ও ২৮ জুলাই একটা আনন্দমেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আমরা অংশগ্রহণ করেছি। বড় পরিসরের ওই অনুষ্ঠানে প্রায় সাত হাজার দর্শক ছিল। ওই অনুষ্ঠানে আমি ও প্রিয়া দুটি ফিল্মের গানে পারফর্ম করেছি। আমার মেয়ে অহনাও সেখানে গান করেছিল। এটা একটা বড় বিষয় ছিল যে, প্রায় দশ বছর পর আমরা তিনজনে একটা প্রোগ্রামে পারফর্ম করেছি।

বাংলাদেশের কথা মনে পড়ে? এর মধ্যে বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা আছে?

বাংলাদেশের কথা তো অবশ্যই মনে পড়ে। মাতৃভূমির টান তো অবশ্যই আছে। এখানে কোনো সুন্দর কিছু দেখলেও দেশের কথা মনে পড়ে। এখানকার কোনো লেকের পাশ দিয়ে গেলে মনে হয় এটা বাংলাদেশের কাপ্তাইলেক, কোনো নদীর পাশ দিয়ে গেলে মনে হয় এটা আমার দেশের পদ্মা নদী। এই তুলনাগুলো করি নিজের সাথেই মনের অজান্তে। দেশে অবশ্যই যেতে চাই। তবে দুই পরিবারের সবাই এখানে সেটেল হওয়ায় বাংলাদেশে যাওয়া কম হয়। অবসরে বাংলাদেশে যেতে চাই শুটিংয়ের কাজে, বেড়াতে কিংবা বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা দিতে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা