• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

অবকাঠামো উন্নয়নে ঋণে সুদের হার কমল

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০২০  

শিল্প খাতের অবকাঠামা উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বিতরণের জন্য গঠিত তহবিলের সুদের হার কমানো হয়েছে। এ দফায় গড়ে ঋণর সুদের হার কমবে ২ থেকে আড়াই শতাংশ। সুদের হার এ ৩০ জুন থেকেই কার্যকর করা হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নে বেসরকারি খাতে ঋণের জোগান বাড়াতে নেয়া হয়েছে এ উদ্যোগ।

এ বিষয়ে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে সুদের হার কমানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের অবহিত করার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে শিল্প খাতের অবকাঠামো নির্মাণে ৪২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়। এর মেয়াদ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। এ তহবিল থেকে ডলার ও বাংলাদেশি মুদ্রায় উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়া হতো দীর্ঘ মেয়াদে।

ঋণের সুদের হার নির্ধারিত হতো বাংলাদেশ ব্যাংকে এক বছর মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হারের ভিত্তিতে। অর্থাৎ বর্তমানে এক বছর মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদের হার গড়ে ৭ দশমিক ৪৪ থেকে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অর্থাৎ এ তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের ঋণ নিতে হলে ওই হারে সুদ দিতে হতো।

সরকারি হিসাবে টাকার ঘাটতি দেখা দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পরিশোধ করে দেয়। ঘাটতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি হলে এর বিপরীতে একটি ট্রেজারি বিল ইস্যু করে। এসব ট্রেজারি বিল বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিক্রি করে সরকারকে ঋণের জোগান দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিভিন্ন মেয়াদি ট্রেজারি বিল রয়েছে। এর মধ্যে এ ঋণের ক্ষেত্রে এক বছর মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদের হারকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রোববার একটি সার্কুলার জারি করে সুদের হার আরোপের পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে। এতে বলা হয়, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে যে সুদে আমানত সংগ্রহ করে তার সে তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ব্যাংকের আমানতের সুদের হার নিয়ে একটি গড় হার তৈরি করে তা প্রকাশ করে।

গত মাসে আমানতের গড় সুদের হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। অর্থাৎ আমানতের গড় সুদের হার বা এক বছর মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদের হার এর মধ্যে যে হার কম হবে সে হারে উদ্যোক্তারা ওই তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বর্তমানে এক বছর মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর গড় আমানতের সুদের হার ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ দুটির মধ্যে যেটি কম হবে সেই হারে আলোচ্য তহবিল থেকে উদ্যোক্তারা ঋণ নিতে পারবে। অর্থাৎ প্রচলিত সুদ হারে গড়ে ২ থেকে আড়াই শতাংশ কমে উদ্যোক্তারা ঋণ নিতে পারবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, সুদের হার কমানোর ফলে এ তহবিলের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে। অবকাঠামো নির্মাণের খরচ কমবে। বাজারে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জনে সহায়ক হবে। তবে তিনি তহবিলের আকার আরও বাড়ানোর দাবি করেন।

এ তহবিল পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (আইপিএফএফ) প্রজেক্ট সেল একটি বিভাগ গঠন করা হয়েছে। ৪২ কোটি ডলারের তহবিলের মধ্যে ৬ কোটি ডলার দিয়েছে বাংলাদেশ। বাকি ৩৬ কোটি ডলার দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তহবিল থেকে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। তহবিলটি আবর্তনশীল বলে সুদসহ যেসব ঋণ পরিশোধ করা হবে সেগুলো আবার তহবিলে যোগ হয়ে এর আকার বেড়ে যাবে। এগুলো থেকে আবার ঋণ দেয়া হবে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, এখন আমানতের সুদের হার কম এবং সরকারি ঋণের চাহিদা বেশি থাকায় ১ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদের হার বেশি। আবার আমানতের সুদের হার বেড়ে গেলে তহবিলের সুদের হারও বেড়ে যাবে। অর্থাৎ সুদের হার উঠানামা করবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা