• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

কেমন ছিল জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের যাত্রাপথ?

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২২  

মহাজগতকে নতুন করে দেখিয়েছে ১০০ কোটি ডলার খরচ করে বানানো জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। এখন এই নভোদূরবীন প্রতিদিন চমক লাগানো তথ্য দিলেও শুরুতে এর মহাকাশ যাত্রা হয়ে উঠেছিল অনিশ্চিত।

সেপ্টেম্বর ২০০২

শুরুতে এই নভোদূরবীনের পরিচিতি ছিল নেক্সট জেনারেশন স্পেস টেলিস্কোপ নামে। পরে এর নাম বদল করে রাখা হয় জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।
২০০৭

মহাকাশে জেডব্লিউএসটির উড়ান নিয়ে পরিকল্পনা হয়েছিল ২০০৭ সালে। আর তখন থেকেই টান টান উত্তেজনায় সময় কাটছিল জ্যোতির্বিদদের। কিন্তু কিছু প্রকৌশল সমস্যা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় জটিলতার কারণে দেরি হয়ে যাচ্ছিল।

২০১১

জুলাই মাসে যুক্তরাষ্টের রাজনীতিবিদরা জেডব্লিউএসটিতে বরাদ্দ অর্থ তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। কয়েক মাসের টানাটানির পর এ প্রকল্প রক্ষা পায় নভেম্বরে।

২০১৮

স্পেসক্রাফটের কিছু কারিগরি ক্রুটির কারণে মার্চে এই টেলিস্কোপের উদ্বোধন পিছিয়ে যায়।পরে একই বছর জুনে একটি স্বাধীন রিভিউ বোর্ড থেকে ২০২১ সালের মার্চে এ টেলিস্কোপ চালু করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

২০২০

কোভিড মহামারীতে ফের পিছিয়ে যায় এই নভোদূরবীণের যাত্রা। পরে একই বছর জুলাই মাসে ঘোষণা করা হয়, জেমস ওয়েব রওনা হবে ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর।

জুন ২০২১

আরিয়ান ৫ রকেটের উড্ডয়নে সমস্যার কারণে ফের পিছিয়ে যায় জেমস ওয়েবের যাত্রার তারিখ। ঠিক হয় নভেম্বরে বা ডিসেম্বরের আগে আগে রওনা হবে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।

সেপ্টেম্বর ২০২১

নাসা এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) আরও এক দফা তারিখ পিছিয়ে দেয়। তখনও ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ইএসএর লঞ্চ সাইট ফ্রেঞ্চ গুয়েনার কুরুতে এসে পৌঁছায়নি অবজারভেটরি। সে কারণে এ দুই সংস্থা তারিখ পিছিয়ে নতুন তারিখ ঘোষণা করে ১৮ ডিসেম্বর।

১৮ ডিসেম্বর ২০২১

আবহাওয়া খারাপ ছিল। তাই আর উড্ডয়ন হল না। অপেক্ষা পরের তারিখের।

২৫ ডিসেম্বর ২০২১

অবশেষে ফ্রেঞ্চ গুয়েনার কুরু থেকে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২০ মিনিটে আরিয়ান ৫ রকেটে চড়ে মহাকাশে পাড়ি জমায় জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।

২৬ ডিসেম্বর ২০২১

মহাকাশে ওয়েবের মূল অ্যান্টেনা পরীক্ষা করে দেখা হয়। এতে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায়। পৃথিবীতে দিনে দুই বার উপাত্ত পাঠাতে কাজ করার কথাও ওই অ্যান্টেনার।

২৭ ডিসেম্বর ২০২১

চাঁদের কক্ষপথ পেরিয়ে যায় জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।

৩১ ডিসেম্বর ২০২১
সূর্যের তাপ থেকে সুরক্ষা পেতে জেমস ওয়েবের সানশিল্ড খোলা হয়।

৩ জানুয়ারি ২০২২

টেনিস কোর্টের সমান পাঁচ স্তরের সানশিল্ডের চাপ সহনশীলতা দেখা শুরু হয়। পরদিন পর্যন্ত কাজ শেষে অবশেষে সানশিল্ড পুরোপুরি কাজের উপযোগী হয়।

৫ জানুয়ারি ২০২২

টেলিস্কোপের দ্বিতীয় আয়না বা সেকেন্ডারি মিরর চালু করা হয়।

৮ জানুয়ারি ২০২২

টেলিস্কোপের মূল বড় আয়নাটি পুরোদমে চালু করার কাজ শেষ হয় এদিন। পরের কাজটি ছিল মূল আয়নার ১৮টি আলাদা আয়নার একটির সঙ্গে আরেকটির দূরত্ব ও অবস্থান ঠিক রাখা। নাসা সে সময় ধারণা দেয়, এ কাজটি করতে ১২০ দিন সময় লাগবে।

২৪ জানুয়ারি ২০২২

৩০ দিনে ১৫ লাখ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ল্যাগরেঞ্জ বিন্দু ২ -এ পৌঁছায় জেমস ওয়েব। ল্যাগরেঞ্জ বিন্দুতে মাধ্যাকর্ষণ বেশ ভারসাম্য বজায় রাখে। এই বিন্দু পৃথিবীর কাছে এবং সূর্যর বিপরীতে। পৃথিবী বরাবর থেকে সূর্যের অক্ষে বসে এই নভোদূরবীণ।

১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২

এ নভোদূরবীণের তোলা প্রথম ছবি ছিল এইচডি ৮৪৪০৬ নক্ষত্রের আলোর। ১৮ ভাগে বিভক্ত আয়নাতে ওই নক্ষত্রের আলো ধরা দিলে উজ্জ্বল ১৮টি মোজাইক বিন্দুর ছবি ওঠে।

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

এইচডি ৮৪৪০৬ নক্ষত্রের আলোর ছবি আবার নতুন করে প্রকাশ করে নাসা। এবারের স্পষ্ট ছবিতে নক্ষত্রকে ষড়ভূজের মত দেখা যায়।

২৮ এপ্রিল ২০২২

নাসা জানায়, জেমস ওয়েব এর অবস্থান সমান্তরাল করার ধাপ সম্পন্ন করেছে। এখন এই টেলিস্কোপ দিয়ে আরও স্পষ্ট ছবি ধারণ সম্ভব হবে।

১১ জুলাই ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন মিলে জেমস ওয়েবের তোলা সুস্পষ্ট ছবি প্রকাশ করেন।আর তারপরই আলোচনায় আসে কোটি কোটি বছর আগের মহাজগতের ছবি।

জো বাইডেন যে ডিপ ফিল্ড ইমেইজ প্রকাশ করেছিলেন, তাতে ছিল এসএমএসিএস ০৭২৩ ছায়াপথ গুচ্ছ, যা থেকে আলো আসতে সময় লেগেছে ৪৬০ কোটি বছর।

নাসা জানায়, অবজারভেটরির ১৭টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র পুরোপুরিভাবে পরীক্ষিত। জেমস ওয়েব এখন ‘ঐতিহাসিক বৈজ্ঞানিক মিশনের জন্য প্রস্তুত’।

১২ জুলাই ২০২২

এক অনুষ্ঠানে নাসা জেমস ওয়েবের ইনফ্রারেড ক্যামেরায় তোলা আরও ছবি প্রকাশ করে। উজ্জ্বল রঙিন ছবিতে দেখা যায় কারিনা নেবুলা, সাদার্ন রিং নেবুলা, স্টেফানস কুইনটেট এবং একটি গ্যাস দানব গ্রহের আবহাওয়ার বিশ্লেষণ।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা