• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

খুলনায় ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততা, ভোক্তাদের ক্ষোভ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২০  

মহানগরবাসীর সুপেয় পানির অন্যতম উৎস্য খুলনা ওয়াসা’র পানিতে অতিরিক্ত লবণাক্ততা পাওয়া গেছে। দুই সপ্তাহ ধরে এ অবস্থা চলছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ভোক্তারা।

তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে পারছেন না তারা। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এদিকে পানিতে লবণাক্ততার বিষয়টি স্বীকার করে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নগরীর গিলাতলা এলাকার রিজার্ভারে ভৈরব নদের পানি ঢুকে পড়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। তবে, সমস্যা চিহ্নিত করে একটি রিজার্ভারসহ নগরীর ৫-৬টি নলকূপ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সমস্যা কেটে যাবে।

সূত্র মতে, মহানগরীতে সুপেয় পানির সঙ্কট নিরসনে মধুমতি নদী থেকে ৩৩ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসিয়ে রূপসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে পানি আনা হয়। প্লান্টে পানি পরিশোধনের পর রূপসা নদীর তলদেশ হয়ে শহরের ৬৫০ কিলোমিটার পাইপে সরবরাহ করে ওয়াসা।

কথা ছিল-আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভাগীয় শহর খুলনার ১৫ লাখ বাসিন্দা প্রতিদিন গড়ে ১১ কোটি লিটার সুপেয় পানি পাবেন। কিন্তু সে স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। উপরন্তু যেসব গ্রাহক ওয়াসার পানি পাচ্ছেন, তারাও লবণাক্ততাসহ নানা সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নগরীর বাগমারা এলাকার বাসিন্দা হোমিও চিকিৎসক মো. নুরুল হুদা শেখ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় উল্লেখ করেন, ‘খুলনাতে ওয়াসার লাইনের যখন নতুন করে কাজ চলছিল, তখন শুনেছিলাম মধুমতির সুমিষ্ট পানি আমরা পাব। এখন যে পানি পাচ্ছি তা তো মনে হচ্ছে বঙ্গোপসাগরের পানি।’

একই এলাকার বাসিন্দা মশিউর রহমান যাদু বলেছেন, ‘অভিযোগ দেওয়ার পর ওয়াসা থেকে একজন ইঞ্জিনিয়ার এসেছিলেন। পানির নমুনাও পরীক্ষা করলেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি।’

টুটপাড়া মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা শিক্ষক ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, ‘সপ্তাহখানেক ধরে লক্ষ্য করছি ওয়াসার পানি লবণাক্ত। মধুমতির পানি শোধন না হলেও তো এতো লবণাক্ত হবার কথা নয়।’

নগরীর নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা ফয়েজুল ইসলাম পলাশ বলেন, ‘ওয়াসার পানি তো মুখে দেওয়া যাচ্ছে না, এতো লবণাক্ত। তা অবশ্য একদিক দিয়ে ভাল, এ পানি একটু গরম করে খেলে লবণ পানি খাওয়া হয়ে যাবে।’

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, ‘আমরা একটা সঙ্কটকাল অতিক্রম করছি। এমনিতেই মানুষ অত্যন্ত কষ্টে আছে। তাছাড়া সামনে রমজান মাস। এ সময়ে ওয়াসার পানিতে লবণ হলে নগরবাসীর দুর্ভোগের সীমা থাকবে না। কারণ অনুসন্ধান করে দ্রুততার সাথে সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।’

খুলনা ওয়াসা’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. কামাল আহমেদ বলেন, ‘গিলাতলার লাইনে ভৈরব নদের পানি ঢুকে পড়ায় ওই রিজার্ভারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন ওই পানি আর নগরীতে ঢুকতে পারবে না। এছাড়া শহরের ৫-৬টি কল (নলকূপ) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রূপসার সামন্তসেনায় ট্রিটমেন্ট প্লান্টের নমুনা এবং প্রতিটি রিজার্ভারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।’

দ্রুত এ সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা