• সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৫ ১৪৩১

  • || ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আজকের খুলনা

দাকোপে ঝুঁকিপূর্ণ ১৭টি বেড়িবাঁধ : আতঙ্কে হাজার হাজার মানুষ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০২৪  

১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কারণে সমুদ্র উপকূলীয় খুলনার দাকোপের হাজার হাজার মানুষের আতংঙ্ক কাটছে না। দীর্ঘ বছর পার হলেও ঝুঁকিপূণ বেড়িবাঁধে পাউবো সংস্কার বা বিকল্প বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড় আইলা, মহাসিন, ফোণি ও রিমালের ক্ষত মুছতে না মুছতেই স্থানীয় নদ-নদী গুলিতে স্বাভাবিক অপেক্ষা ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতায় পানি বাড়ায় জোয়ারের তোড়ে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদী ভাঙ্গনের কারণে মানচিত্র থেকে ক্রমান্বয়ে ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে এ সমুদ্র উপকূলীয় উপজেলাটি। নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে অনেকে চলে গেছেন জীবন জীবিকার সন্ধানে দেশের বিভিন্ন স্থানে। অশ্রুশিক্ত কন্ঠে কথা বলছিলেন পশুর নদীতে বসতঘর বাড়ি, ভিটেমাটি হারিয়ে সর্ব শান্ত হওয়া পানখালী গ্রামের কৃষক প্রীতিষ রায়। শুধু প্রীতিষ রায় নয় তাদেরমত সর্ব শান্ত হয়েছেন এ গ্রামের খোকন রায়, শ্যামল রায়, গোবিন্দ রায়, জিতেন্দ্র নাথ রায়,দীপক রায়, নিখিল রায়।
সরেজমিনে ঘুরে ও স্থানীয় এলাকা বাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ষাট দশকের সময় নির্মিত ওয়াপদা বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগে বাঁধগুলোতে অধিক ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে অত্র উপজেলার পাউবোর ৩১নং পোল্ডার বেড়িবাঁধের তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের গড়খালী আন্ধার মানিক, ঝালবুনিয়া, বটবুনিয়া বাজার, পশ্চিম কামিনী বাসিয়া, মোজামনগর, পানখালী ইউনিয়নের পানখালী ফেরীঘাটের পূর্ব পাশে, মৌখালী স্লুইচ গেটের পশ্চিম পাশে, খোনা চালনা পৌরসভার মেঝ খলিশা, চালনা মেরীন প্রোডাক্টস লিঃ এর দক্ষিণ পাশে, এদিকে পাউবো কর্তৃপক্ষ ৩২ এবং ৩৩নং পোল্ডারে ৩ বছর পূর্বে টেকসই বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করলেও উক্ত বাঁধের সুতারখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কালাবগী আমিনুর সানার বাড়ির সামনে, নলিয়ান লুৎফর সানার মৎস্য ঘেরের সামনে, লতিফ সানার বাড়ির সামনে, গুনারী কালি বাড়ি লঞ্চঘাটের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে, কামারখোলা ইউপির জালিয়াখালী, ভিটেভাঙ্গা, ৩৩নং পোল্ডারের বাজুয়া চুনকুড়ি খেয়া ঘাটের পশ্চিম পাশে, পোদ্দারগঞ্জ বাজারের পশ্চিম পাশে, বানিশান্তা আমতলা গ্রামগুলো পাউবোর বাঁধ নদী ভাঙ্গনের শিকারে অধিক ঝুঁকিপূণ হয়ে পড়েছে। পাউবো কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় যে কোন সময়ে বাঁধ গুলো নদীতে বিলীন হয়ে প্লাবিত হতে পারে অর্ধশতাধিক গ্রাম। এদিকে সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে পাউবো কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন স্থানের কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কার করতে দেখা যায়।
তিলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জালাল উদ্দিন বলেন,প্রায় ষাটের দশকে নির্মিত বাঁধ নদী শাসন করে টেকসই বাঁধ অদ্যবদি পর্যন্ত নির্মাণ না হওয়ায় স্থানীয় নদ-নদীতে স¦াভাবিক অপেক্ষা ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতায় পানি বাড়ায় এবং জোয়ার ভাটার তোড়ে তার ইউনিয়নের ৫ থেকে ৬টি স্থানের বেড়িবাঁধ অধিক ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম বলেন,নদ-নদী গুলোতে হঠাৎ স্বাভাবিক অপেক্ষা পানি বৃদ্ধির কারণে এ বাঁধ ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। তবে নদী ভাঙ্গন স্থান সমুহে পাউবো কর্তৃপক্ষ তদারকির পাশাপাশি সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।উপকূলীয় বাসীদের রক্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ সকল বাঁধে খুবশিঘ্রই কাজ শুরু করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়দেব চক্রবর্তী বলেন,এ উপজেলার জনজীবন ও তাদের মালামাল রক্ষার্থে নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ সকল বেড়িবাঁধসহ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ দ্রুত সংস্কারের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।

আজকের খুলনা