• শুক্রবার   ২৪ মার্চ ২০২৩ ||

  • চৈত্র ১০ ১৪২৯

  • || ০২ রমজান ১৪৪৪

আজকের খুলনা

খুলনা ডুমুরিয়ার অবৈধ ইটভাটা বন্ধে উচ্ছেদ অভিযান শুরু

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

হাইকাের্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসন ও ইটভাটা মালিকরা সম্মিলিত ভাবে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভদ্রা ও হরি নদীর পাড়ের ১৪টি অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধসহ উচ্ছেদ অভিযান আজ বুধবার থেকে শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া ও রুদাঘরা ইউনিয়নের পশ্চিম পাশে বহমান ভদ্রা ও হরি নদীর দু’পাশে ব্যক্তি মালিকানার জমির সাথে নদীর চর ভরাটিয়া জমি অবৈধ ভাবে দখল করে এলাকার প্রভাবশালীরা বেশ কয়েকটি ইটভাটা গড়ে তােলে। নদীর চর দখল ও এলাকার পরিবেশের ঝুকির কথা বিবেচনা করে বিগত ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ(এইচআরপিবি) নামক একটি মানবাধিকার সংস্হার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবি মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকাের্টের একটি বেঞ্চ ‘ডুমুরিয়া উপজেলার ভদ্রা ও হরি নদী দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তােলা ১৪টি ইটভাটার মধ্যে থাকা সরকারি নদীর জায়গা থেকে ইটভাটা উচ্ছেদ/অপসারণ করে জমি অবমুক্ত করার জন্যে খুলনা জেলা ও ডুমুরিয়া উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেন।’কিন্ত আদালতের সেই আদেশ যথাযথ ভাবে প্রতিপালন না হওয়ায় গত বছর ৭ডিসেম্বর রিটকারি আইনজীবির আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট খুলনা জেলা প্রশাসক ও ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে স্বশরীরে আদালতে উপস্হিত হয়ে জবাব দেয়ার নির্দেশনা দেন। এরই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার গত ১০ জানুয়ারী আদালতে উপস্হিত হয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

এক পর্যায়ে বিচারপতি জে.বি.এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল’র সমন্বয়ে গঠিত হাইকাের্ট বেঞ্চ ওই ১৪টি অবৈধ ইটভাটা অপসারণ করে নদীর জায়গা অবমুক্ত করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।

কিন্ত তারপরও ইটভাটা মালিক পক্ষ সময় চেয়ে উচ্চ আদালতে একাধিক আবেদন করলেও তা খারিজ করে দেওয়া হয়। তারই প্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানুয়ারি মাসে ওইসব ভাটাগুলাের মধ্যে থাকা সরকারি জমির সীমানা নির্ধারণ করা হয়। আজ বুধবার সকাল থেকে বিপুল সংখ্যক উৎসুখ জনতা ও ইটভাটা শ্রমিকদের উপস্হিতিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস.এম মুমিন লিংকন,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(এল,এ) আতিকুল ইসলাম, ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান,উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) আফরোজ শাহীন খসরু-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও থানা পুলিশ এবং ইটভাটা মালিকদের যৌথ উদ্যাগে উচু-চিমনি ও ক্লিন বা চুল্লি ভাঙ্গা কার্যক্রমের পাশাপাশি ইট সরিয়ে নেয়া শুরু করা হয়। প্রথমে খর্ণিয়া ব্রিজ সংলগ্ন ‘নুরজাহান ব্রিক্স’র উচু চিমনি ও ক্লিন বা চুল্লি ভাঙ্গা হয়। এরপর এক-এক করে কে.পি.বি ব্রিক্স, এস.বি ব্রিক্স, কে.বি-২ ব্রিক্স, সেতু-১ ব্রিক্স ও এফ.এম.বি ব্রিক্স,কেবি-২ ব্রিক্স’র মধ্যে থাকা অবৈধ স্হাপনা সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়।

এ প্রসঙ্গে নুরজাহান ব্রিক্স’র মালিক শাহাজান জমাদ্দার বলেন,’আমি মহামান্য হাইকাের্টর নির্দেশ মান্য করে আমার ইটভাটার মধ্যে সরকারি জমির ওপর থাকা স্হাপনা নিজেই শ্রমিক দিয়ে সরিয়ে নিচ্ছি’।

এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা মােতাবেক আমরা ইতোমধ্যে ওই ১৪টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি। তাছাড়া সি.এস রেকর্ড অনুযায়ী নদীর জমি চিহ্নত করে তা উদ্ধার করতে আজ ৬ টি ইটভাটার অংশ বিশেষ ও ২ টির চিমনি ভাঙ্গা হয়েছে। অভিযান অব্যহত রয়েছে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা