• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

অভিযান অব্যাহত থাকলেও রূপসায় বন্ধ হচ্ছে না চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২২  

রূপসায় মৎস্য অধিদপ্তর, র‌্যাব ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে পৃথক পৃথক অভিযান অব্যাহত থাকলেও বিশ্বের জিআই পণ্য হিসেবে খ্যাত হোয়াইট গোল্ড চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধ হচ্ছেনা। অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের কৌশল বদল করে চালিয়ে যাচ্ছে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ কার্যক্রম। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ৩৫টি অভিযান চালিয়ে ৭ হাজার ৫৩৫ কেজি অপদ্রব্য পুশ করা চিংড়ি বিনষ্ট করেছে। জরিমানা আদায় করেছে ১৩ লাখ ২১ হাজার ৯শ’ টাকা। 
রূপসা উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, খুলনাঞ্চল চিংড়ির জন্য খুবই বিখ্যাত। জিআই পণ্য চিংড়ি বাংলাদেশের হোয়াইট গোল্ড হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। তবে অধিক মুনাফা লোভী এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অপদ্রব্য জেলি পুশ করে এসব চিংড়ির (বাগদা ও গলদা) ওজন বৃদ্ধি করছে। পাশাপাশি মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে চিংড়ির রং আকর্ষণীয় করছে। এসব চিংড়ি বিদেশে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের খোলা বাজারেও বিক্রি করা হচ্ছে। অবৈধ ব্যবসায়ীদের এসব অপতৎপরতা রোধে মৎস্য অধিদপ্তর, র‌্যাব ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে পুশ বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

সূত্রমতে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত র‌্যাব, কোস্ট গার্ড ও মৎস্য অধিদপ্তরের সমন্বয়ে ১৯টি মোবাইল কোর্ট ও ৩৫টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এসব মোবাইল কোর্ট ও অভিযানে মামলা দায়ের হয়েছে ১৬টি। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১৩ লাখ ২১ হাজার ৯০০ টাকা এবং অপদ্রব্য পুশ করা বাগদা ও গলদা চিংড়ি বিনষ্ট করা হয়েছে ৭ হাজার ৫৩৫ কেজি। এ সময় চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ কাজে নিযুক্ত থাকার দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে ১৪ জনকে।

সর্বশেষ গত ৩ নভেম্বর র‌্যাব-৬, স্পেশাল কোম্পানির একটি আভিযানিক দল ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাপী কুমার দাসের সমন্বয়ে রূপসা উপজেলার পূর্ব রূপসা ঘাট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অসাধু ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে। এ সময় অপদ্রব্য পুশকৃত ৫০ কেজি চিংড়ি বিনষ্ট করা হয়। এছাড়া ৯ নভেম্বর র‌্যাব-৬ ও মৎস্য দপ্তরের সমন্বয়ে নতুন বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এ সময় মেসার্স ইমন এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ মিন্টু চৌধুরীকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান এবং অপদ্রব্য (জেলী) পুশকৃত ১৫০ কেজি চিংড়ি বিনষ্ট করা হয়।

রূপসা চিংড়ি বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করার ঘটনায় ব্যবসায়ীরা একের পর এক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে পুশের ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা কিন্তু এককভাবে দায়ী নয়। মাছ কোম্পানিগুলি এসব পুশ চিংড়ি না নিলে ব্যবসায়ীরা কখনোই পুশ করতো না। তিনি বলেন, চিংড়ির পুশ বন্ধ করতে হলে আগে মাছ কোম্পানিগুলিকে স্বচ্ছ হতে হবে।

রূপসা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বাপী কুমার দাস বলেন, জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে ভোক্তা পর্যায়ে এবং দেশি-বিদেশী পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য দপ্তর বাংলাদেশ পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও র‌্যাব সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। চলতি বছর পৃথক অভিযানে ১৪ জনের কারাদণ্ড, ১৩ লাখ ২১ হাজার ৯০০টাকা জরিমানা ও ৭ হাজার ৫৩৫ কেজি অপদ্রব্য মিশ্রিত চিংড়ি বিনষ্ট করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অভিযান বৃদ্ধির পাশাপাশি জন সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা যেন এই কার্যক্রম থেকে নিবৃত্ত থাকে সে জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। তবে পূর্বের অভিযানে জব্দকৃত চিংড়িতে যেখানে ৯০ শতাংশ’র ক্ষেত্রে পুশের অস্তিত্ব পেতাম, লাগাতার অভিযানের কারণে বর্তমানে সেখানে ৩০ শতাংশ অস্তিত্ব পাচ্ছি।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা