• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

কয়রায় পুলিশ সদস্য হত্যায় ৩৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২২  

নয় বছর পর কয়রা উপজেলার আংটিহারা ক্যাম্পের পুলিশ সদস্য মফিজুল ইসলাম হত্যা মামলায় ৩৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। ২৯ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো: আ: লতিফ কয়রার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: দেলোয়ার হোসেনের আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হল, গনি সরদার, তার স্ত্রী আয়শা ও দু’ছেলে আনারুল ও সিরাজুল, মফিজুল ইসলাম নান্নু ও তার ভাই রেজাউল ইসলাম, নাসের আলী মোড়ল, গোলাম মোস্তফা রিপন, রউফ শেখ, দাদরিজ শেখ, আছের আলী মোড়ল, মো: তাছের আলী মোড়ল, মো: সিরাজুল গাজী, নাজমুল ইসলাম, ওলিউর রহমান, মইনুল ইসলাম লিটন, আলমগীর হোসেন, সাইদুল ইসলাম, মো: ওহিদুজ্জামান খোকন, মো: মিজানুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, সবুর মোল্লা, কবিরুল সরদার, রুহুল আমীন সরদার, পরিতোষ কুমার মন্ডল, মজিদ গাজী, হাকিম মোড়ল, নাজমুন্নাহার, মহিউদ্দিন মোড়ল, তাইজুল গাজী, আব্দুল হাকিম গাজী, আতাপুর জামান ঢালী, হালিমা ও সুমাইয়া খাতুন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মো: আব্দুল লতিব বলেন, ২০১৩ সালের ১০ মার্চ রাতে কয়রা উপজেলার আংটিহারা ক্যাম্পের এসআই ও কয়েকজন সদস্য নাশকতা মামলায় কয়েকজন আসামিকে ধরতে গোলখালী এলাকার গনি ও রশিদ সরদারের বাড়ি ঘেরাও করে। এ সময় ওই এলাকার বায়তুল আকসা মসজিদের মাইকে পুলিশের আগমনের ঘটনাটি প্রচার করা হয়। এলাকার সমস্ত মানুষকে পুলিশকে প্রতিহত করার জন্য আহবান জানানো হয়।

তিনি আরও বলেন, ওইদিন যারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছিল তারা সকলে জামায়াত শিবিরের অনুসারী ছিল। আংটিহার এলাকর মানুষ সেদিন রাতে আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছুড়তে থাকলে এলাকার মানুষ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল গুলি ছুড়তে থাকে। দ্বিমুখী আক্রমণে পড়ে পুলিশ সদস্য মফিজুল ইসলামের বাম পায়ে হাটুর ওপর একটি গুলি লাগে। সাথে সাথে তিনি মাটিতে পড়ে যান। অন্যান্য সহযোগীরা এটি দেখে গুলি চালাতে থাকে। পরে মফিজকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

প্রথমে তাকে কয়রা উপজেলার জায়গীর মহল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে খুমেক হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে পুলিশ সদস্য মফিজের মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে ওইদিন আংটিহারা ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই মোমেনুর রহমান বাদী হয়ে ৮ জন আসামির নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলার দায়ের করেন, যার নং ৮। এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, গনি সরদার, রশীদ সরদার, আনারুল, সিরাজুল, আয়েশা খাতুন, মফিজুল ইসলাম নান্নু, রেজাউল ইসলাম ও মজিদ গাজী। হত্যাকান্ডের পর থেকে উল্লিখিত আসামিরা গা ঢাকা দেয়।

প্রথমদিকে মামলাটি তদন্ত করেন কয়রা থানার পুলিশ পরিদর্শক মো: বাবুল আক্তার। তদন্তে নেমে তিনি আসামিদের ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় মামলাটি একই বছরের ১০ অক্টোবর সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। মামলাটি তদন্ত করেন সিআইডি এসআই মিলন কুমার ঘোষ। পরে মামলাটির দায়িত্বভার দেওয়া হয় সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মো: হায়াত আলীর ওপর। তিনি হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একনলা বন্দুক ও ৮ রাউন্ড গুলিসহ পরিতোষ নামে একজন আসামিকে আটক করেন। তদন্ত শেষে হায়াত আলী এজাহারে বর্ণিত ৮ আসামিসহ আরও ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে বাদী উল্লিখিত আসামিদের নামা অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন জানালে আদালত ২০১৬ সালের ২৮ জুন পিবিআইতে প্রেরণ করেন।

পিবিআই পরিদর্শক শেখ আবু বক্কার সিদ্দিক তদন্তভার গ্রহণ করেন। ওই সময়ে মামলার দু’জন আসামি উচ্চ আদালতে তদন্ত স্থাগিতের জন্য আবেদন করে। এরপর মামলাটি ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলাটি পিবিআই পরিদর্শক লতিব গ্রহণ করেন। এরপর ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি উচ্চ আদালত আসামিদের আবেদন করা স্থাগিতাদেশ ভ্যাকেট করেন। তদন্ত শেষে তিনি আদালতে উল্লিখিত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা