• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

প্রতিকূলতার মধ্যেও উপকূলের মাঠে হাসছে সোনালী ফসল আমন

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১  

তীব্র লবণাক্ততা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে ফসলের মাঠ লবণ পানিতে তলিয়ে যাওয়া, আষাঢ়ের অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় বীজতলা নষ্ট হওয়াসহ নানান প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কৃষক আশায় বুক বেঁধে আমন চাষ করে পেয়েছে সফলতা। উপকূলের মাঠে পাকা ধানের শীষ দুলছে দক্ষিণা বাতাসে।

দিগন্তজোড়া সোনালি ধান। ধানের ঘ্রাণে মৌ মৌ চারদিক। উপকূলীয় খুলনার কয়রার মাঠে মাঠে ধুম পড়েছে বোরো ধান কাটার। বাঁধ ভেঙে ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়া এবং আষাঢ়ের অতিবৃষ্টির জলাবদ্ধতায় বীজতলা নষ্ট হওয়া সহ নানান প্রতিকূলতার মধ্যে এবছর আমন ধানের চাষ করেছিল কয়রা উপজেলার কৃষকেরা। আশানুরূপ ফসল না হলেও যে ফসল হয়েছে তা ঘরে তুলেতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা।

বাগালী ইউ‌নিয়‌নের বা‌মিয়া, খোলারচা বিল ও মহারাজপুর ইউ‌নিয়‌নের পূর্ব মহরাজপুর, মধ্য মহরাজপুর, জদুর বিল, মহরাজপুর হে‌তেল খালীর বিলে এক তৃতীয়াংশ জ‌মি‌তে ধান হয়‌নি। এছাড়া যতটুকু জ‌মি‌তে ধান হ‌য়ে‌ছে তাও স‌ন্তোষজনক নয়। বারবার বীজতলা নষ্ট হওয়ায় ও দে‌রি‌তে জ‌মি রোপন কর‌তে যে‌য়ে উৎপাদন খরচ অ‌নেক বে‌ড়ে যায়।

এদিকে কৃষি অধিদপ্তর বলছে উপকূল থেকে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের চলতি বছরে ১৩ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে আমন উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রায় ১৪ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ছিলো ৬৭ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। ভালো ফলন হওয়ায় এবছর বিঘা প্রতি ১৫/১৬ মন আমন উৎপাদন হওয়ায় এবছর সম্ভব ৭৩ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন আমন উৎপাদন হবে।

কয়রা সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর কয়রা গ্রামের নিতিশ মন্ডল বলেন, ১১ বিঘা জমি শুধুমাত্র আমন ধানের জন্য ৫৫ হাজার টাকায় হারিতে নিয়ে আমনের চাষ করেছেন। আষাঢ়ের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে তার সব বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। ভেবেছিলো এবার আর ধান হবে না। তবে নতুন করে আবার অল্প সময়ের মধ্যে বীজতলা তৈরি করে অল্প সময়ে ভালো ধান পেয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ভালো ধান পেয়েছেন।

একই গ্রামের দূর্লভ গাজী বলেন, এ বছর দুই বিঘা জমিতে প্রথম আমন চাষ করেছেন। তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। নতুন করে অন্য জায়গা থেকে পাতা কিনে আমন চাষ করে। ভেবেছিলো সে ফসল তুলতে পারবে না। তবে ২ বিঘা জমিতে ৩০ মণের বেশি আমন পাবে বলে আশা করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, উপকূলে লবণাক্ততার পরিমাণ বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে লবণ পানিতে আমনের মাঠ তলিয়ে যায়। আষাঢ়ে অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় বীজ তলা নষ্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় নতুন করে আমন চাষ করে কৃষক এ বছর অন্য বছরের তুলনায় বেশি সফলতা পেয়েছে। আমরা আশা করছি এ বছর আমন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা পূরণ হবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা