• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

তেরখাদা উপজেলা চেয়ারম্যানের অশালিন বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল, শোকজ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২১  

নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হলেও নৌকার প্রতি আক্রোশ কমছে না খুলনা জেলা আ’লীগের সদস্য ও তেরখাদা উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলামের। সুযোগ পেলেই নৌকা ডুবাতে একহাত নেন তিনি। সম্প্রতি উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম আ’লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা ও তেরখাদা উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এফএম অহিদুজ্জামান এবং তার মাতাকে নিয়ে অশালীন, অশোভনীয়, অশ্রাব্য গালিগালাজ করেছেন। গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) নৌকা বিরোধী ওই বক্তব্যের রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। উপজেলা আ’লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সাংগঠনিক ব্যবস্থার (বহিস্কার) জন্য জেলা আ’লীগের সভাপতি/সাধারন সম্পাদকের বরাবর আবেদন করেছেন। একই সাথে জেলা আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে শোকজের এক সপ্তাহের মধ্যে যৌক্তিক জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা আ’লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী।

ভাইরাল হওয়া রেকর্ডে উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম তার বক্তব্যের একপর্যায়ে বলেন, “নৌকা পাইছো, নৌকারও মাইরে চু...., সভাপতি মাইরেও চু...।” অশালীন বক্তব্য প্রদান করে যার অডিও রেকর্ডটি মুহুর্তেই ফেসবুকে পরে ভাইরাল হয়।

খুলনা জেলা আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক এমএ রিয়াজ কচি বলেন, অডিও রেকর্ডটি শুনেছি, তাকে শোকজ করা হয়েছে। আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে জবাব দিবেন তিনি। দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কঠোর। দোষী সাব্যস্ত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এফএম অহিদুজ্জামান বলেন, জেলা আ’লীগের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যর সাথে কথা বলে তাদের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা আ’লীগের পক্ষেও তাকে শোকজ করা হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার নামে একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। যেটা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে, আমার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বক্তব্য এডিটিং এর মাধ্যমে ভুলভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।  

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় আ’লীগের নেতাকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে থাকেন। কিছুদিন আগে তেরখাদা উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি শেখ ইয়াছিন আহমেদের মাতা ও নৌকা কে নিয়ে অশ্রাব্য অশালীন অশোভনীয় বক্তব্যর মাধ্যমে হুমকি প্রদান করেন।

শেখ ইয়াসিন আহমেদ বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছিলাম, নৌকা প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ শহিদুল ইসলামের পক্ষে কাজ না করায় তিনি আমাকে ও নৌকাকে নিয়ে ৪/৫ মাস পূর্বে জনসম্মুখে একই কায়দায় গালিগালাজ করে। আমি  বিষয়টি নেতাকর্মীদের জানালেও তার বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

উপজেলা আ’লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করেন। তিনি জামায়াত বিএনপির লোকদের নিয়ে ৬টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তার আপন ছোট ভাই শেখ জাহাঙ্গীর আলমকে ইউপি নির্বাচনে ৫নং তেরখাদা সদর ইউপির নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এফএম অহিদুজ্জামানের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে দাড় করিয়ে প্রকাশ্যে ও গোপনে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সাথে বৈঠক করছেন এবং নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, এমন অভিযোগ নৌকার প্রার্থীদের।

প্রসঙ্গত্ব, তেরখাদা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান ফকির হত্যা মামলার মূল সন্দিগ্ধ আসামী উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ শহিদুল ইসলাম। প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা