• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

দাকোপে প্রতিমা সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত মৃৎ শিল্পিরা

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২১  

সনাতন ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজার আর মাত্র ৩ দিন বাকি। সারা দেশের ন্যায় খুলনার দাকোপে এ বছর ৮১টি পূজা মন্ডপে শারদীয়া দূর্গা পূজা উদযাপনে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। দূর্গাপূজা অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিমা তৈরিতে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পিরা। দূর্গোৎসব উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবম্বীদের মধ্যে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী ও অস্থায়ী এসব সার্বজনীন মন্ডপ তৈরি করে পূজার প্রস্তুতি চলছে। প্রতিমা তৈরিতে মাটির কাজ প্রায় শেষ, অধিকাংশ মন্ডপে চলছে রং, তুলি দিয়ে প্রতিমা সাজ সজ্জার কাজ। এতে কৃত্রিম জীবন পাচ্ছেন দেবী দূর্গা, শিব, লক্ষী, সরস্বতি, কার্তিক, গনেশ ও অসুর প্রতিমার। কোন কোন প্রতিমায় আবার পরানো হচ্ছে শাড়ি, হাতের বালাসহ অন্যান্য গহনা। পাশাপাশি আলোক সজ্জা, প্যান্ডেল তৈরি, মন্ডপ ও তার আশে পাশে সাজ সজ্জার কাজসহ নানা কাজেও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পূজার সাথে সংশ্লিষ্টরা। সাথে সাথে অন্যরাও পূজার কেনাকাটা করতে শুরু করেছেন। তবে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছর জাকজমক পূজার আয়োজন করতে পারছেন না আয়োজকরা।

উপজেলার চুনকুড়ি এলাকার প্রদীপ মুর্খাজী বলেন, ‘মহা চন্ডীতে উল্লেখ আছে ত্রেতা যুগে ভগবান রাজা রাম চন্দ্র দশানন রাবণের সাথে যুদ্ধে রত হন। রাম চন্দ্র পাপের বিনাশের লক্ষে দেবী আদ্ধাশক্তি মহামায়ার কাছে শক্তি বৃদ্ধির আশায় শরৎকালে তার পূজা করেছিলেন এবং যুদ্ধে জয়লাভ করে দেবী সিতাকে উদ্ধার করেন ও রাবণকে নিহত করতে সক্ষম হন রাম চন্দ্র। সেই থেকে পৃথিবীতে প্রতি বছর শরৎকালে সনাতন ধর্মাবলম্বরা দূর্গোৎসব পালন করে আসছেন। আগামী ১১ অক্টোবর সোমবার দেবী পক্ষের ষষ্ঠি তিথীতে বোধন তলায় মঙ্গল ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়ে শারদীয়া দূর্গা দেবীর এ উৎসব শুরু হবে। আর আগামী ১৫ অক্টোবর মহাবিজয় দশমীতে দেবী দূর্গা প্রতিমা বির্ষজনে এ উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।’ এ বছর দেবী দূর্গার আগমন হবে ঘোড়ায় চড়ে। আর প্রস্তান হবে দোলায় চড়ে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।

বাজুয়া এলাকার কমলেশ মোড়ল ও পোদ্দারগঞ্জ এলাকার প্রতিমা তৈরি ভাস্কার দিপংকর মন্ডল জানান, ‘প্রতিমা তৈরিতে মাটির কাজ শেষ, এখন চলছে রং তুলি দিয়ে সাজ সজ্জার কাজ। এবার তাদের ৪ জনের টিম মিলে বিভিন্ন এলাকায় ১০টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরি করেছেন।’ এতে তাঁরা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাবেন এবং বিভিন্ন মালামালে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানান।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ভাবে দূর্গোৎসব পালনের লক্ষ্যে উপজেলার পূজা মন্ডপগুলোতে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে এবং আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতি বছরের মতো এ বছরও পুলিশ, ব্যাটিলিয়ান আনসার, সাধারণ আনসারসহ মোবাইল টিমের প্রায় পাঁচ শতাধিকেরও বেশী সদস্য মোতায়েন থাকবে।’

এব্যাপারে উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি অসিত বরণ সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার রায়, চালনা পৌরসভা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি অতিন মন্ডল সাথে আলাপকালে এ প্রতিবেদকে জানান, এ বছর মোট ৮১ টি পূজা মন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে ৩টি পূজা ব্যক্তিগতভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারদীয়া দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। দর্শনার্থীদেরও অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্ডপে আসতে হবে। এ ছাড়া মন্দিরের বাহিরে সকল প্রকার আলোকসজ্জা, সাজসজ্জা, মেলার আয়োজন, আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি পরিহারসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের দেওয়া ১৮ দফা দিক নির্দেশনা মেনে চলতে উপজেলার সকল মন্দির কমিটিকে বলা হয়েছে। জনসমাগম না করে আরতিসহ সব অনুষ্ঠান সীমিত পরিসরে করতে পারবে। সকল অপশক্তি রুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রেখে সবাই মিলে মিশে শান্তিপূর্ণ ভাবে দূর্গোৎসব পালন করবেন বলে তারা জানান।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা