• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

তরমুজ চাষে ভাগ্য ফিরেছে রূপসার কৃষকের

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০  

শুকনো মৌসুমের এ ফসলের আবাদ বর্ষা মৌসুমে করায় গাছগুলো তুলে দেয়া হয়েছে মাচায়। প্রতিটি খেতের মাচায় লাউ বা চালকুমড়ার মত ঝুলছে অসময়ের তরমুজ।

 ওজন বেশি হওয়া নেটের ব্যাগ দিয়ে তরমুজ পেচিয়ে বেঁধে দেয়া হয়েছে মাচার সাথে।

তীব্র রোদে যখন খেটে কর্মজীবী সাধারণ মানুষ যখন দিশেহারা তখন ঘেরের পাড়ে তরমুজ ক্ষেতে খেটে চলেছেন এখানকার চাষিরা। ফলন ভালো হওয়ায় সব কষ্ট এখন তাদের আনন্দে পরিণত হয়েছে।

অসময়ে ভালো স্বাদের তরমুজ পেয়ে এলাকাভিত্তিক বেড়েছে ব্যাপক চাহিদা। খবর পেয়ে অনেকে আসছেন মাচায় ঝুলন্ত তরমুজ ক্ষেতের এই মনোরম দৃশ্য দেখতে।

 অনেকে ক্ষেত থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তরমুজ। পাইকারি ক্রেতারাও জমিতে আসছেন তরমুজ কেনার জন্য।

দুই গ্রামের ২০জন চাষির তরমুজ আবাদ ইতোমধ্যে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তাদের এই সফলতায় আগামীতে অনেক কৃষক তরমুজের আবাদ করবে বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

রূপসা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে কৃষকরা যখন দিশেহারা তখন তাদেরকে তরমুজ আবাদের জন্য উৎসাহ প্রদান করেছেন রূপসা কৃষি বিভাগ। এলকার জন্য এটি নতুন ফসল হওয়ায় প্রথমে কৃষকরা তেমন একটা আগ্রহ দেখায়নি।

তবে কৃষি বিভাগ হাল ছাড়েনি। উপজেলা কৃষি অফিসারের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে আগ্রহী কৃষকের তালিকা করা হয়। উপজেলা পরিষদ উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্য তরমুজ বীজ, জৈব সার, ফেরোমন ট্রাপ, স্টিকি ট্রাপ, বায়োডার্মা ও ইকোম্যাক এবং কৃষকদেরকে নিরাপদভাবে তরমুজ উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

এভাবেই কৃষকদের উৎসাহিত করে উপজেলার দুই গ্রামে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে অফসিজনে তরমুজের আবাদ করা হয়। আগে এসব জমিতে কৃষকরা শসার আবাদ করত। শসায় বিভিন্ন রোগ ও পোকা মাকড়ের আক্রমণের কারণে অনেকে শসা চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সবুজ ডোরাকাটা সুইট ড্রাগন জাত, যার গড় ওজন ১৫ কেজি, কালো রংয়ের ব্লাক ডায়মন্ড জাত যার সর্বোচ্চ ওজন ১৫ কেজি, সুইট ড্রাগন পাকিজা যার সর্বোচ্চ ওজন ১৫ কেজি, সবুজ দাগ কাটা কানিয়া জাত (ভেতরে হলুদ) যার ওজন ৩ থেকে ৪ কেজি হয়ে থাকে।

গাছ লাগানোর ৬০-৭০ দিনে ফলন আসে। এ বছর এসব জাতের আবাদ করা হয়েছে এখানে।

সরজমিনে কথা হয় গোয়াড়া গ্রামের কৃষক দেবযানী মুখার্জী, চম্পা অধিকারী, চন্দ্রা বৈরাগী, বিবেচ্যু হীরা এবং নতুনদিয়া গ্রামের সবুজ বৈরাগী ও সুব্রত বৈরাগীর সাথে। তারা বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় তরমুজের বীজসহ অন্যান্য উপকরণ পেয়েছি।

তরমুজ আবাদের জন্য আমাদের এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ফলন ভালো হয়েছে। অসময়ের তরমুজ হওয়ায় মূল্যও ভালো পাচ্ছি।

রূপসা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদুজ্জামান বলেন, আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগের কারণে প্রথমবারের মতো অফসিজনে তরমুজের আবাদ হয়েছে। আগামীতে এ এলাকায় তরমুজের আবাদ বাড়বে বলে আমি আশাবাদী। আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা