• সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৫ ১৪৩১

  • || ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আজকের খুলনা

গ্রেফতার আতঙ্কে আত্মগোপনে “হঠাৎ নেতা মিঠু”

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

যৌথবাহিনীর অভিযানের খবরে আত্মগোপনে চলে গেছেন বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত এস এম আরিফুর রহমান মিঠু। ৫ আগস্ট পরবর্তী কয়েকটি ঘটনায় নানান বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন তিনি। আরাফাত প্রকল্পের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট। বাসিন্দাদের মারপিটসহ নানা অঘটন ঘটিয়েছেন তিনি। সব’চে বড় ঘটনা খুলনার ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান খুলনা চেম্বার অব কমার্স দখলের অপচেষ্টা, টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় থানায় এজাহারের ঘটনায় মিঠু গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন।

থানায় অভিযোগ: দল থেকে পদত্যাগের প্রায় তিন বছর পর নিজেকে বিএনপি নেতা দাবী করে খুলনা চেম্বার অব কমার্স দখলের অপচেষ্টাকারী আরিফুর রহমান মিঠুর বিরুদ্ধে পকেটমারার অভিযোগ এনে খুলনা সদর থানা এজাহার দাখিল হয়েছে। এজাহারকারী খুলনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মোশারফ হোসেন ২৫ আগস্ট বাদী হয়ে এজাহার করেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এজাহারে বাদী মেসার্স হিমেল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী উল্লেখ করেন গত ২৫ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টায় এস এম আরিফুর রহমান মিঠু খুলনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র কার্যালয়ে থেকে বের হয়ে যাবার সময়ে চেম্বারের নীচতলার প্রধান গেট থেকে বাদীর সাথে মিঠুর কুশল বিনিময়ের এক পর্যায়ে মিঠু অপমানজনক ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে এবং বাদীর প্যান্টের পেছন পকেটে ২১,০০০/= (একুশ হাজার) টাকা ছিল যার সবটাই নিয়ে মিঠু দ্রুত চলে যায়। বাদী কিছু বুঝে উঠতে পারার আগেই ঘটনাটি ঘটে বিধায় তৎক্ষণাৎ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী দুইজন স্বাক্ষী আছে।

অরাফাত প্রকল্পে ভাঙচুর: ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর হঠাৎ করে নিজেকে বিএনপি নেতা জাহির করে নগরীতে বেসামাল কর্মকান্ড শুরু করেন মিঠু। মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে তিনি আরাফাত এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ও দুটি দোকান লুটপাট করেন। এদিকে মহানগর বিএনপি মিঠু দলের কেউ না উল্লেখ করে তার বেসামাল কর্মকান্ডকে শক্তহস্তে দমনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

আকুতি আরাফাত আবাসিকের বাসিন্দাদের: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আরাফাত আবাসিক এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চান বাসিন্দারা। তারা আবাসিক প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আরিফুর রহমান মিঠুর চাদাঁবাজি ভূমিদস্যুতা থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন। শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে আরাফাত আবাসিক শান্তি শৃঙ্খলা কমিটির উদ্যোগে ময়ূর ব্রিজ বাইপাস সড়কে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। আবাসিকের বাসিন্দারার বলেন, প্রকল্পের মালিক মিঠু আবাসিক এলাকায় নতুন আইন জারি করেছেন। কেউ নিজ জমিতে বাড়ির কাজ করতে গেলে প্রকল্পের কাছ থেকে অনুমোদনপত্র বাধ্যতামূলক করছে। না হলে বাড়ির কাজ বন্ধ করে দেয়। নিজ জমিতে বালু ভরাট করতে গেলে মোটা অঙ্কের চাদাঁ দাবি করে। দাবিকৃত টাকা পরিশোধ না করলে মিঠু তার নিজ বাহিনী দিয়ে বাড়িওয়ালাদের মারপিট করছে। আরাফাত এলাকাবাসীরা আরিফুর রহমান মিঠুর সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে তদন্ত ও ভূমিদস্যু চাদাঁবাজ মাদক বিক্রেতাদের আশ্রয়দারকারীর দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছে। তারা এলাকায় শান্তিতে বসবাসের নিশ্চয়তা চান। আরাফাত আবাসিক শান্তিশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন।

মিঠুর পদত্যাগ: ২০২১ সালে ২৫ডিসেম্বর খালিশপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেন এস এম আরিফুর রহমান মিঠু। এরপর তিনি সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাইদের সাথে সু-সর্ম্পক গড়ে তুলে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে সক্ষম হয়। শেখ পরিবারের সহায়তায় ব্যাংক লোন নিয়ে গড়ে তোলেন আরাফাত গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। নিজেই ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান।

খোলা চিঠি: বিভিন্ন অভিযোগে মিঠুর বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে পত্রিকায় খোলাচিঠি লিখে নিজেকে নির্দোষ সাজানোর অপচেষ্টা করেন মিঠু। কিন্তু কোন পত্রিকার তার বিরুদ্ধে ব্যক্তি আক্রোশের কোন সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। খুলনা চেম্বারের ঘটনায় থানায় এজাহার, বিএনপির সংবাদ সম্মেলন ও অরাফাতের বাসিন্দাদের মানবন্ধন নিয়েই খবরের কাগজে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

মোবাইল বন্ধ: মঙ্গলবার মিঠুর সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তার অফিসে খোঁজ নিতে গেলে তিনি খুলনা বাহিরে আছেন বলে জানা গেছে।

আজকের খুলনা