• শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৮ ১৪৩১

  • || ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আজকের খুলনা

স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সুস্থতায় ফিজিওথেরাপি

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০২৪  

মস্তিষ্কের সবচেয়ে মারাত্মক জটিল রোগটির নাম হলো স্ট্রোক। এ রোগে কেউ আক্রান্ত হয়েছেন- বোঝার সঙ্গে সঙ্গে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করিয়ে দিতে হবে। মানব-মস্তিষ্কে সবসময় অক্সিজেন ও গ্লুকোজ সরবরাহ হয়ে থাকে। যদি কোনো কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়, তখন মস্তিষ্কের কোষগুলো মারা যেতে থাকে। এতে স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বাধাপ্রাপ্ত হয়। শরীরের বিভিন্ন অংশে দেখা দিতে থাকে বিশেষ পরিবর্তন। অনেক সময় শরীরের কোনো অংশ প্যারালাইসিস হতে থাকে। এ সমস্যাটিকেই স্ট্রোক হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। স্ট্রোক সাধারণত দুইভাবে হয়ে থাকে। যেমনÑ ইস্কেমিক স্ট্রোক ও হেমোরেজিক স্ট্রোক। আমাদের দেশে আক্রান্ত রোগীর ৮৫ শতাংশ সাধারণত ইস্কেমিক স্ট্রোক হিসেবে বিবেচিত হয়। বাকি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হেমোরেজিক স্ট্রোক হয়ে থাকে। তাই ১০ থেকে ১৫ শতাংশ রোগীর অপারেশনের প্রয়োজনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়ে থাকে।

ইস্কেমিক স্ট্রোক : এই স্ট্রোকে রোগী আক্রান্ত হলে তার মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে সাধারণভাবে কোথাও কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হতে থাকে।

হেমোরেজিক স্ট্রোক : মস্তিষ্কের রক্ত চলাচলে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্তনালিতে জমাট বেঁধে যাওয়া বা নালি ফেটে রক্ত মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে অনেক সময়। সাধারণত নারীর তুলনায় পুরুষ এই স্ট্রোকে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।

রোগের কারণ : ট্রমা বা সড়ক দুর্ঘটনা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, রক্তে অতিরিক্ত চর্বির উপস্থিতি, অনিয়মিত খাবার গ্রহণ, অ্যালকোহল জাতীয় খাবার বেশি করে খেলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ইনফেকশাস ডিজিজ থেকেও এ স্ট্রোক হতে পারে। জন্মগতভাবে প্যারালাইসিস হতে পারে।

লক্ষণ : শরীরের একপাশ অথবা যে কোনো অংশ অবশ হতে পারে। কথায় জড়তা, কথা বলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। চোখে ঝাপসা দেখা অথবা একটি জিনিস দুটি দেখা যেতে পারে। শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে কষ্ট হতে পারে। হঠাৎ প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। বমি ভাব বা বমি হতে পারে। ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে। রোগীর খিঁচুনি হতে পারে। জ্ঞান হারিয়েও ফেলতে পারে।

চিকিৎসা : স্ট্রোকে আক্রান্তের চার ঘণ্টার মধ্যে যদি একজন বিশেষজ্ঞ নিউরোলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া যায়, তা হলে খুব দ্রুত রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব।

আধুনিক চিকিৎসায় স্বাভাবিক অবস্থায় রোগীকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব শতকরা ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রেই। এই চিকিৎসার জন্য রোগীর পরিবারকে দুটি দিক খেয়াল রাখতে হবে। গুরুত্বসহকারে দুটি চিকিৎসাও একসঙ্গে চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর তা হলো মেডিসিন ও ফিজিওথেরাপি। এই দুই চিকিৎসার সমন্বয়ে রোগী আবার আগের অবস্থায় অর্থাৎ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন। একজন নিউরোমেডিসিন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কিছু ওষুধ সেবন করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থেকে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দিতে হবে। তবেই রোগী স্বাভাবিক জীবনে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে সক্ষম হবেন।

আজকের খুলনা