• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

চীনে মৃত বর-কনের দাম ২০ লাখ টাকা !

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০২১  

চলতি সপ্তাহের ঘটনা। পূর্ব চীনের শানডং প্রদেশের একজন মহিলা মারা গিয়েছিলেন আত্মহত্যা করে। তাকে দাহ করার পর ছাই বিক্রির জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা তা মানেননি। কিন্তু অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মী চুরি করে তা বিক্রি করে দিয়েছে। 

কারণ, কেউ একজন তার মৃত ছেলের কবরে ওই ছাই রাখতে চেয়েছিল। উদ্দেশ্য, ‘ভৌতিক বিয়ে’। জড়িত থাকার অভিযোগে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মীকে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। চীনের অনেক পরিবারেই অবিবাহিত পুরুষ বা নারী মারা গেলে, তাদের বাবা-মা তাদের উপযুক্ত মৃতদেহ খুঁজতে শুরু করেন তাকে বিয়ে করাতে। এ জন্য তারা রীতিমতো নিয়োগ দেন একজন ম্যাচমেকারও।

চীনে বহুকাল ধরে চলে আসছে অসমর্থিত প্রথা ‘ভৌতিক বিয়ে’। নিষিদ্ধ থাকা সত্বেও এখনো চীনের বহু জায়গায় এ কুসংস্কার প্রচলিত আছে। 

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, এ বিয়ের উদ্দেশ্য হলো মৃত ব্যক্তির জন্য একজন সঙ্গীর জোগান দেওয়া। কিছু বয়স্ক চীনার মধ্যে এখনো নিখাঁদ বিশ্বাস- লোকজন যদি মৃত্যুর পর তার সে ইচ্ছে পূরণ না করে, তবে সে শান্তিতে বিশ্রাম নিতে পারবে না। আবার পৃথিবীতে ফিরে আসবে। এ বিশ্বাস থেকেই চালু হয়েছিল ‘ভৌতিক বিয়ে’। 

এ বিয়ের জন্য রয়েছে ম্যাচমেকারও। যারা মৃত বর বা কনের সন্ধান করে দেন, তারা পারিশ্রমিক হিসাবে পান দেড় লাখ ইউয়ান (২০ লাখ টাকা)। 

১৯৪৯ সালে চীনা কমিউনিস্ট সরকার এই প্রথাটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছিল। কমে গেলেও প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে, বিশেষ করে উত্তর চীনে ‘ভৌতিক বিয়ে’র এ প্রথা এখনো অব্যাহত আছে।

মৃতদের বিয়ে হয় জীবিতদের মতোই। অভিভাবকরা ম্যাচমেকারের কথার মাধ্যমে তাদের সন্তানদের জন্য একটি উপযুক্ত মিল খোঁজেন। 

তারপরে তারা অন্য পরিবার সম্পর্কে, সম্ভাব্য স্বামী/স্ত্রীর পেশা, বয়স সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে এবং এটি একটি মিল কিনা তা নিশ্চিত করতে একটি ছবিও দেখাতে হয়। তারা একটি বিবাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং একটি নতুন কবর খুঁড়ে সেগুলোকে একসঙ্গে দাফন করেন।

নারীদেহের দাম সাধারণত বয়স, শরীরের সতেজতা, দেহের গড়ন, চেহারা, পারিবারিক বৃত্তান্তের ওপর নির্ধারণ হয়। যেমন, ট্রাফিক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া মহিলার চেয়ে সাধারণ রোগে মারা যাওয়া মহিলার দাম বেশি দেওয়া হয়।

৩০ বছরের অভিজ্ঞতা একজন ম্যাচমেকার বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে বাজারটি সমৃদ্ধ হয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে একটি ম্যাচের জন্য পাওয়া যেত প্রায় পাঁচ হাজার ইউয়ান। 

২০০০-এর দশকে তা ৫০ হাজার ইউয়ানে উন্নীত হয়। ২০১০ সালের মধ্যে, এক লাখ ইউয়ান। ২০১৬ সালের পর থেকে প্রতিটি বর বা কনের জন্য গুনতে হচ্ছে এক লাখ ৫০ হাজার ইউয়ান।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা