• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

গরুর দুধ মাত্র ৫ টাকা লিটার !

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২০  

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি মিল্কভিটা কারখানা ৩ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এ কারণে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার দেড় লাখ দুগ্ধ উৎপাদনকারী কৃষকের উৎপাদিত গরুর দুধ খুচরা বাজারে ২০ থেকে ২৫ টাকা লিটার দরে বিক্রি হলেও শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির ননভ্যাট দুধ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫ টাকা লিটার দরে। অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনাটি সত্য বলে জানিয়েছেন এ সমিতির সভাপতি ওয়াজ আলী।

তিনি জানান, বাজারে ক্রেতা নেই। তাই কৃষকের কিছুটা লোকসান ঠেকাতে দুধ থেকে মেশিনের সাহায্যে পুরো ভ্যাট তুলে নেয়া হচ্ছে। এরপর ননভ্যাট দুধ ৫ টাকা লিটার দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ সহজেই দুধ কিনে খেতে পারছেন। ভ্যাট তুলে নিলেও দুধের গুণমান ঠিক থাকে। স্বাদের দিক দিয়ে একটু কম হয়। এ ননভ্যাট দুধ দিয়ে দই, মিষ্টি, পায়েশ, পিঠা সব কিছুই তৈরি করা যায়। এটা স্বাস্থ্যের জন্যও খুব ভালো।

তবে যারা এই ভ্যাট তুলতে পারছেন না তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। দুধ বিক্রি করতে না পেরে তারা ভ্যানে করে দুধ নিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে ২০ থেকে ২৫ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করছেন। এতে তাদের গো-খাদ্যের দামই উঠছে না।

এসবের ফলে দুধের রাজধানী খ্যাত পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় কৃষকেরা পানির দরে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ওপর হঠাৎ করেই গো-খাদ্যের দাম বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা চরম লোকসানে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, আশির দশক থেকে পাবনা জেলার বেড়া, সাঁথিয়া, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর এবং সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া উপজেলা নিয়ে দেশের সর্ববৃহৎ দুগ্ধ অঞ্চল গড়ে উঠেছে। শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী এ এলাকায় প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি গো-খামার রয়েছে। এছাড়া এ অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি কৃষক তাদের বাসগৃহে দুগ্ধ উৎপাদনকারী গাভী লালন পালন করে থাকেন। ফলে প্রতিদিন এ অঞ্চলে প্রায় ১০ লাখ লিটার গরুর দুধ উৎপাদিত হয়।

প্রচুর দুধ উৎপাদিত হওয়ায় এ এলাকা থেকে মিল্ক ভিটা, আড়ং, প্রাণ ডেইরি, ফার্মফ্রেস, অ্যামোমিল্ক, আফতাব, রংপুর ডেইরি, ব্র্যাকসহ প্রায় ২০টি দেশীয় প্রতিষ্ঠান তরল দুধ সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করে সারাদেশে বাজারজাত করে থাকে। এ সব প্রতিষ্ঠানের দুধ সংগ্রহের পরিমাণ প্রতিদিন প্রায় পাঁচ লাখ লিটার। বাকি দুধ স্থানীয় ঘোষ বা দুধ ব্যবসায়ীরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দুধসহ ঘি ও ছানা তৈরি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়ে থাকেন। এছাড়া স্থানীয়ভাবেও মিষ্টিজাত কারখানাতে ও চায়ের দোকানে প্রচুর দুধ প্রয়োজন হয়।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা