‘হাত ধোয়া’র কথা বলায় মরতে হয়েছিল যে ডাক্তারকে!
আজকের খুলনা
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২০
নোভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সারা পৃথিবীতে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এই ভাইরাস থেকে বাঁচার প্রথম উপায় হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে হাত ধোয়াকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও প্রতিটি মানুষকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার উপর জোর দিতে বলেছে। এখন মানুষ সেটা করছেনও নিয়মিত।
অথচ পৃথিবীর ইতিহাসে ভাইরাস থেকে বাঁচতে প্রথম যে ডাক্তার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথা বলেছিলেন তাঁকে অন্য ডাক্তাররা তাঁকে পাগলা গারদে পাঠিয়েছিলেন, সেখানে তাকে প্রায় খুন করা হয়েছিল।
পানি ও সাবানই ভাইরাস সংক্রমণ আটকানোর মোক্ষম অস্ত্র। কিন্তু উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জীবাণু ছড়ানোর বিষয়টি এতোটা জানা ছিল না। সে সময় হাত ধোয়ার প্রচলনটা ছিলো কদাচিৎ। টয়লেট থেকে এসে, খাবার আগে, কোনো নোংরা জিনিস ধরার পরে, এমনকি কোনো ক্লিনিক্যাল প্রসিডিউর কিংবা অপারেশনের আগে ডাক্তাররাও হাত ধুতেন না।
হাঙ্গেরিয়ান চিকিৎসক ইগনাজ স্যামেলওয়াইজ প্রথম এ বিষয়ে ভাবতে শুরু করেন। এই ডাক্তার পিউপেরাল ফিভার, যেটা চাইন্ড বেড ফিভার নামে পরিচিত ছিলো, সেটা নিয়ে ভাবতে শুরু করলেন। ১৮৪৬ সালে তিনি একজন ফিজিশিয়ানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং পিউপেরাল সেপসিস এর মধ্যে কানেকশন খোঁজার চেষ্টা করেন।
১৮৪০-এ স্যামেলওয়াইজ যখন অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা সাধারণ হাসপাতালে কাজ করছেন, সে সময়ে বহু নারী বাড়িতে প্রসব করতেন। যারা হতদরিদ্র ছিলেন বা যাদের শারীরিক জটিলতা ছিল, তারাই হাসপাতালে প্রসব করতেন। হাসপাতালে প্রসবের ক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষ ভয় পেতেন, তার অন্যতম কারণ ছিল, ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে হাসপাতালে সূতিকা জ্বরে প্রসূতির মৃত্যু হতো। তখন অনেকেই মনে করতেন, বাতাস চলাচলের অভাব ও ভিড়ের কারণেই এভাবে মৃত্যু ঘটে।
ভিয়েনা হাসপাতালে দুটি পৃথক প্রসূতিবিভাগ ছিল। প্রথমটিতে থাকতেন পুরুষ চিকিৎসকরা, দ্বিতীয়টিকে থাকতেন নারী চিকিৎসকরা। ডা. স্যামেলওয়াইজ দেখলেন, পুরুষ ডাক্তাররা যে বিভাগে কাজ করেন, সেখানে সূতিকাজ্বরে নারীদের মৃত্যুর হার দু থেকে তিনগুণ বেশি।
তিনি দেখলেনব পুরুষ ডাক্তার ও ছাত্ররা সকালে অটোপ্সি করবার পর প্রথম বিভাগে এসে রোগী পরীক্ষা করেন ও সন্তান প্রসব করান। দ্বিতীয় বিভাগে কেবল ধাত্রীরাই কাজ করেন এবং তাদের সঙ্গে অন্য কারও সংস্পর্শ ঘটে না। হাসপাতালের প্যাথোলজিস্টের মৃ্ত্যুর পর আরও নিশ্চিত হলেন ডা. স্যামেলওয়াইজ। মৃত্যুর আগে ওই প্যাথোলজিস্ট এক নারীর অটোপ্সি করেছিলেন, যার মৃত্যু হয়েছিল সূতিকা জ্বরে। অটোপ্সির সময়ে সময়ে ওই প্যাথোলোজিস্টের আঙুল কেটে যায়। প্যাথোলজিস্টের মৃত্যুর আগে তার শরীরে সূতিকা জ্বরের লক্ষণ দেখা গিয়েছিল, তা থেকে স্পষ্ট হলো অন্যরাও এই রোগে পড়তে পারে।
ডা. স্যামেলওয়াইজ সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন, যেসব ডাক্তাররা ডিসেক্টিং রুম থেকে সরাসরি প্রসূতিবিভাগে আসেন, তারা সূতিকা জ্বরে মৃত নারীদের থেকে ভয়ংকর পার্টিকল নিয়ে আসেন, তা থেকেই সুস্থ নারীরা সংক্রমিত হন এবং তাদের অপমৃত্যু ঘটে।
১৮৪৭ সালে স্যামেলওয়াইজ পুরুষ ডাক্তারদের নির্দেশ দেন প্রসূতি বিভাগে স্বাস্থ্যবতী মায়েদের পরীক্ষা করবার আগে হাত ধুতে হবে এবং তাদের ইনস্ট্রুমেন্টগুলি ক্লোরিনেটেড লাইম দিয়ে ধুতে হবে।
এর ফল হল অবিশ্বাস্য। ওই বিভাগে মৃত্যু হার ১৮.২৭ শতাংশ থেকে নেমে এল ১.২৭ শতাংশে। শুধু তাই নয়, ১৮৪৮-এর মার্চ থেকে অগাস্টের মধ্যে একজন নারীরও মৃত্যু হল না।
স্যামেলওয়াইজ এরপর হাত ধোয়ার উপকারিতা নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। তিনি এই নতুন পদ্ধতি সে সময়ের অনুমোদিত চিকিৎসাজ্ঞানের কাছে নিয়ে গেলেন। কিন্তু তাঁর সহকারীরা তাঁর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করলেন, কারণ তাদের মনে হলো ডা. স্যামেলওয়াইজ তত্ত্ব বলতে চায় তারাই, অর্থাৎ চিকিৎসকরাই রোগীর মৃত্যুর জন্য দায়ী। ভিয়েনা হাসপাতালে মৃত্যুহার কমলেও, হাসপাতালও হাত ধোয়ার তত্ত্ব প্রত্যাখ্যান করল।
উদ্বিগ্ন স্যামেলওয়াইজ খোলা চিঠি লিখলেন চিকিৎসকদের কাছে। হাঙ্গেরিতে ফিরে ১৮৬১ সালে নিজের কাজ প্রকাশ করলেন, কিন্তু কোনও লাভ হল না। তখনও জীবাণু তত্ত্ব সেভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সায়েন্টিফিক সোসাইটির লোকজন তখনও বিশ্বাস করতো রোগ বালাই হয় খারাপ আত্মার মাধ্যমে।
স্যামেলওয়াইজ মরিয়া হয়ে সকল গাইনি এন্ড অবসের ডাক্তারদের চিঠি লিখতে শুরু করেছিলেন যেন তারা হাত ধুয়ে, ইনস্ট্রুমেন্টস ধুয়ে কাজ করেন। এতে জীবন বাঁচবে।
হাত ধোয়ার কথা বলার কারণে তখনকার সব চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘পাগল’ বলে আখ্যা দেন।
হাত ধোয়া নিয়ে হাসাহাসি করা লোকজনদের স্যামেলওয়াইজ ‘ইরেসপনসিবল মার্ডারার’ বলতেন। যেকোনো আড্ডাতে ডাক্তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি এই হাত ধোয়ার থিওরির কথা তুলতেন। সবাই বিরক্ত হতো।
আস্তে আস্তে তিনিও ডিপ্রেশনে পড়তে লাগলেন। সবাই তাকে পাগল মনে করছিল। ১৮৬৫ সালে নার্ভাস ব্রেকডাউনের পর স্যামেলওয়াইজকে দেয়া হলো ‘মেন্টাল এসাইলামে’। কেউ বললো তাঁর ‘নিউরো সিফিলিস’ হয়েছে, কেউ বললো ‘বদ আত্মা’ ভর করেছে।
মাত্র ১৪ দিন পর, মেন্টাল এসাইলামের গার্ডরা তাঁকে প্রচন্ড পেটালো। পেটানোর ফলে তাঁর হাতে-শরীরে ক্ষত থেকে পচন ধরে। সেখান থেকে তাঁর ডান হাতে গ্যানগ্রিন হয়। রক্তের বিষক্রিয়া হয়ে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে ১৩ আগস্ট, ১৮৬৫ সালে মারা যান এই যুগান্ত সৃষ্টিকারী চিকিৎসক।
ডা. ইগনাজ স্যামেলওয়াইজের মৃত্যুর মাত্র দু বছর পর, বিশিষ্ট শল্যচিকিৎসক জোসেফ লিসার সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়া আটকাতে হাত ধোয়া ও ইন্স্ট্রুমেন্ট জীবাণুমুক্ত করার উপর জোর দিলেন। ১৮৭০ সাল থেকে চিকিৎসকরা এ পদ্ধতি গ্রহণ করলেন। ইগনাজ স্যামেলওয়াইজের কাজ লুই পাস্তুরের জীবাণু তত্ত্বের অন্যতম ভিত্তি।
অথচ মহান এই মানুষটি মৃত্যুর পর দুই থেকে তিনজন তার শেষকৃত্যে আসেন। তাঁর মৃত্যুর কথা ‘হাংগেরিয়ান মেডিক্যাল সোসাইটি’ প্রকাশও করেনি তাদের পেপারে।
জীবাণু তত্ত্ব, অর্থাৎ রোগের উৎপত্তি জীবাণু থেকে হতে পারে আবিষ্কারের অনেক বছর পর তাঁর স্বীকৃতি মেলে। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে তাঁর অনেক বড় স্তম্ভও গড়া হয়েছে।
হাত ধোয়ার মতো সাধারণ ব্যাপারটি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে একজন চিকিৎসককে একঘরে এবং উন্মাদ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছিল, তাঁকে নিজের জীবনটাও দিতে হয়েছিল সেদিন, আজকের বার বার হাত ধোয়া আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের যুগে দাঁড়িয়ে সে কথা বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয় বৈকি। অথচ ইতিহাসের নির্মম সত্য এটাই।
করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার অন্যতম পথ বারবার হাত ধোয়া। মানুষ এখন মনে করে বারবার হাত ধুচ্ছেন। এই বিশেষ মুহূর্তে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিপ্লব এনে দেয়া চিকিৎসক ইগনাজ স্যামেলওয়াইজের প্রতি সম্মান জানিয়ে শুক্রবার (২০ মার্চ) বিশেষ ডুডল প্রকাশ করেছে জায়ান্ট সার্চ ইঞ্জিন গুগল।
- ফখরুলের কাছে নিপীড়িত নেতা-কর্মীদের তালিকা চাইলেন ওবায়দুল কাদের
- মানব পাচার হতে উদ্ধারপ্রাপ্ত নারী-পুরুষদের জন্য অবহিতকরণ সভা
- খুলনায় সেমাই কারখানাসহ দু’টি প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড
- নগরীতে সুলভ মূল্যে দুধ ও ডিম বিক্রয় কর্মসূচির উদ্বোধন
- শহিদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালে চোরাই ওষুধ জব্দ, আটক ১
- প্রাথমিকে জুনের মধ্যে নিয়োগ হচ্ছে ১০ হাজার শিক্ষক
- ঈদের আগেই ‘সুখবরের’ আশা : জিম্মি নাবিক উদ্ধারে আলোচনায় অগ্রগতি
- কারওয়ানবাজার স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু
- ডলার সংকট কাটছে
- উপজেলা নির্বাচনে কঠোর নির্দেশনা
- অ্যানেসথেসিয়ার ওষুধ পরিবর্তন করার নির্দেশ মন্ত্রণালয়ের
- নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত
- কর্মবিরতি স্থগিত ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের
- এক ইসরাইলির পুরস্কার গ্রহণ করে ড. ইউনূস গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন
- বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক
- এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
- স্কুলছাত্র হত্যা চেষ্টায় ১০ কিশোর গ্রেফতার, দু’জনের স্বীকারোক্তি
- সাতক্ষীরায় গোডাউন থেকে ১৯৯ বস্তা চিনি জব্দ, ব্যবসায়ীকে জরিমানা
- খুলনায় বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ উদ্ধার, একজনকে কারাদন্ড
- পতিত জমিতে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন
- মোংলায় হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে বলগেট ডুবে নিখোঁজ ১
- তেরখাদায় ক্লাইমেট-স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
- শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে ভেসে আসছে গোলাগুলির শব্দ
- উপজেলা নির্বাচন: ছুটির দিনেও অফিস খোলা রাখার নির্দেশ
- আইপিইউর এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের চেয়ারম্যান হলেন স্পিকার
- দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: দীন মোহাম্মদ
- ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার
- ইফতারে ছোলা খেলে পাবেন ৬ উপকার
- ডি মারিয়ার পরিবারকে হত্যার হুমকিদাতারা গ্রেফতার
- কৈলাশটিলায় প্রতিদিন ২ কোটি ঘনফুটের বেশি গ্যাস উৎপাদন করা হবে
- আসছে ১৫০০ টন ভারতীয় পিঁয়াজ
- এই প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ ভিড়ল গাজার উপকূলে
- পায়ুপথে পেটের ভেতর ২৫ ইঞ্চি কুঁচিয়া মাছ, জ্যান্ত উদ্ধার
- চলতি সপ্তাহেই ভারত থেকে আসছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ
- চলন্ত মেট্রোতে দুই তরুণীর রং মাখামাখি, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি
- ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের ও দুর্নীতির অভিযোগ
- বিমানের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনায় প্রথমবার সবাই নারী
- ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি আব্দুল হাই মারা গেছেন
- চিরনিদ্রায় শায়িত প্রবীণ আলেম মাওলানা লুৎফর রহমান
- ২৯ ফেব্রুয়ারি, লিপ ইয়ার নিয়ে অজানা সব তথ্য
- আগে যা করেননি, অনন্ত-রাধিকার বিয়েতে সেই কাজ করলেন অক্ষয়
- বাংলাদেশি হত্যার দায়ে ৫ পাকিস্তানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
- রমজানে ভারতীয় ভিসা আবেদনের নতুন সময়সূচি ঘোষণা
- রমজানে প্রাথমিকে শিক্ষা কার্যক্রম ৯ থেকে সাড়ে ৩টা
- স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ও বাঙালির গণজাগরণ
- কেজিপ্রতি ১৫০ টাকায় মিলবে খেজুর
- ইফতার ও সেহরির সময় নিয়ে হাদিসে যে নির্দেশনা এসেছে
- ভোমরা স্থলবন্দরে দুর্নীতি, ডেপুটি কমিশনারকে প্রত্যাহারের দাবি
- জাতিসংঘে ইসলামোফবিয়া নিয়ে প্রস্তাব পাস, পক্ষে ভোট বাংলাদেশের
- সুইডেনের রাজকন্যা খুলনার কয়রায় যাচ্ছেন মঙ্গলবার