• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের খুলনা

একাধিক মামলার আসামি জামায়াত নেতা আলতাফ গ্রেপ্তার

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২১  

সাতক্ষীরা সিটি কলেজের প্রভাষক মামুন হত্যা মামলাসহ একাধিক নাশকতার মামলার পলাতক আসামি সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সাবেক প্রচার সম্পাদক আলতাফ হুসাইনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১)। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মধুখালির একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। র‌্যাব বলছে, তার বিরুদ্ধে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার নামে জমি কেনাবেচার দালালি ও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের আহসান উল্লাহের ছেলে আলতাফ হুসাইন শহরের রাজারবাগান এলাকায় একটি বাড়ি কিনে সপরিবারে বসবাস করতেন। ইসলামের ইতিহাসে ডিগ্রি লাভের পর তিনি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন জামায়াতের ক্যান্টনমেন্ট নামে খ্যাত এলাহি বক্স একাডেমি ও মোসলেমা কিন্ডারগার্টেনে। জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক হিসেবে তিনি ছিলেন প্রভাবশালী নেতা। এই সুযোগ ধরে তিনি দৈনিক সংগ্রামের জেলা প্রতিনিধি হন। জোট সরকার আমলে তিনি যোগ দেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) জেলা প্রতিনিধি হিসেবে। এরপর তিনি হন সাতক্ষীরার জামায়াত নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা দৈনিক আলোর পরশ-এর সম্পাদক।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরায় জামায়াত শিবিরের সহিংস তাণ্ডবের সময় আলতাফ হুসাইন ও জামায়াতের আরেক নেতা ফিংড়ীর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ও প্রভাষক এবিএম মামুন হোসেনকে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ সময় মামুনের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। জামায়াতের এই তাণ্ডবের সময় বিপুলসংখ্যক সাধারণ নাগরিকের দোকানপাট, বাড়িঘর ভাঙচুর করার পর অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং জামায়াত শিবির বাহিনীর হাতে একে একে হত্যার শিকার হয় প্রভাষক মামুনসহ ১৭ জন।

জেলাব্যাপী অবরোধ সৃষ্টি করে সড়কে গাছপালা কেটে ফেলে তারা। এর প্রত্যেকটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন আলতাফ হুসাইন। এসব ঘটনায় সাতক্ষীরার যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল খালেক, আজিজুর রহমান, আলতাফ হুসাইন, রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন, মো. আলী, ইমান আলী এবং হাবিবুর রহমানসহ ১৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাইদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর সাতক্ষীরায় ঘোষণা দিয়ে সহিংসতায় নামে তারা। প্রথমেই তারা তাণ্ডবলীলা চালিয়ে হত্যা করে এবিএম মামুনকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবি মাঠে নামে। এ সময় বেশ কয়েকজন নিহত হয়।

ওই সময় সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায় আলতাফ হুসাইনসহ তার সহযোগীরা। সাতক্ষীরা সদর থানায় এসটিসি-১১১/২০১৯, এসটিসি-১১২/২০১৯, এসটিসি-১৩৩/১৯১৭ সহ ১৫টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

২০১৭ সালে আলতাফ হুসাইন নিজেকে ‘নিখোঁজ’ বলে কৌশলে খবর প্রচার করেন। সে অনুযায়ী দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে যায়। পরে তাকে ফেনীর ছাগলনাইয়া থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে মর্মে পারিবারিকভাবে প্রচার করা হয়। এরপরও জামায়াতের এই নেতার কোনো চেহারা সাতক্ষীরায় দেখা যায়নি। তিনি ঢাকায় থেকে জমির দালালি করতেন বলে বিভিন্ন সময় খবর পাওয়া যেত।

সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বাবুল আখতার জানান, একাধিক মামলার আসামি জামায়াত নেতা আলতাফ হুসাইনকে সাতক্ষীরায় নিয়ে আসার আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে তার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা