• সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৫ ১৪৩১

  • || ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আজকের খুলনা

পদোন্নতির বদলে পদত্যাগে বাধ্য হলেন খুমেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

পতিত আ’লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে বারবার শাস্তিমূলক বদলী হওয়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ও ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডাঃ আক্তারুজ্জামানকে এবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়তে হয়েছে। এছাড়া খুমেক হাসপাতালের প্রশাসনসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের ৪১ জন চিকিৎসককে হাসপাতালে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এই ৪১ জন চিকিৎসকের মধ্যে স্বাচিপ নেতাদের পাশাপাশি কোন দল না করা চিকিৎসকও রয়েছেন। এরমধ্যে ১৭ জন চিকিৎসকই বর্হিবিভাগে রোগী দেখেন। তবে নাগরিক সমাজের দাবি সঠিক তদন্ত করে আ’লীগ সরকারের দোসর বিভিন্ন ভাবে অনৈতিক সুবিধাভোগী চিকিৎসকদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর নিরীহ চিকিৎসকদের কাজের পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।    
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক  ও ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডাঃ আক্তারুজ্জামান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলী হন চলতি বছর ফেব্র“য়ারি মাসে তত্ত্বাবধায়ক  হিসাবে। কিন্তু খুমেক হাসপাতালে কোন তত্ত্বাবধায়ক পোস্ট ছিলো না, ফলে নির্দিষ্ট বসার জায়গা ও রুম না পেয়ে তিনি ৪ মাস শাস্তি ভোগ করেন। এর আগে যশোর সদর হাসপাতালে তত্ত¡াবধায়ক থাকাকালীন এমএসআর টেন্ডার নিয়ে যশোরের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল এবং সাবেক মন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের অনৈতিক দাবি ও টেন্ডারবাজি রুখে দেন এই সৎ কর্মকর্তা। তিনি আ’লীগের সাবেক এমপি ও সাবেক মন্ত্রীর অনৈতিক ও দুর্নীতি রুখতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক তমিদুল ইসলাম খান এবং পুলিশ সুপার প্রনয় কুমার জোয়ার্দারকে লিখিতভাবে অনুরোধ করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে তাকে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে, যা তৎকালীন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পায়। তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যশোর থেকে খুলনা বিভাগীয় পরিচালকের অফিসে এক গ্রেড নামিয়ে দিয়ে ২০২২ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে সহকারী পরিচালক হিসাবে শাস্তিমূলক বদলী করে আ’লীগ সরকার। কিন্তু সেখানে সততার সাথে চাকুরি করে চলতি বছর তার আবারও ৪র্থ গ্রেড প্রাপ্তি হলে আবারও তাকে শাস্তিমূলক পদহীন খুমেক হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক পোষ্টে বদলী করা হয়। যেখানে ২০১৯ সালে হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক পদই বিলুপ্ত হয়েছে। গত ২৫ জুলাই হাসপাতালের তৎকালীন উপ-পরিচালক বদলী হলে সেখানে উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হিসাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন ডাঃ আক্তারুজ্জামান। 

মঙ্গলবার দুপুরে খুমেক হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে মেডিকেল কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে উপস্থিত হন কার্ডিওলোজি বিভাগের একজন সিনিয়র চিকিৎসক। তিনি আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন ৪১ জন চিকিৎসকের একটি তালিকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। এতে আতঙ্কিত হয়ে দু’টি কাগজেই স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আক্তারুজ্জামান। এই ৪১ জন চিকিৎসকের মধ্যে পরিচালক, উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক, আরএস, আরএমও, রেজিস্ট্রারসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল পোষ্টের চিকিৎসক রয়েছেন।

উপ-পরিচালক ডাঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, জীবনে কেউ আমাকে আ’লীগ ও স্বাচিপ কোন কিছুর প্রাথমিক সদস্য হয়েছি কোনদিন দেখাতে পারলে আমি সকল শাস্তি মাথা পেতে নেবো। আমি কোনদিন সরকারি চাকুরি ছাড়া কোনদিন কোন আ’লীগ নেতার সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছি এমন কোন রেকর্ডও নেই। বরং আমাকে আ’লীগ সরকার বারবার শাস্তিমূলক বদলী করেছে। ইসলাম মানা ও সততার কারণে প্রমোশন দেয়নি। নিচের গ্রেডে নামিয়ে দিয়েছে। এতো সব কিছুর পর গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের পর ভাবলাম এবার হাসপাতালের জন্য কিছু করতে সুযোগ পাবো কিন্তু আমাকে জোর পূর্বক পদত্যাগ করতে হলো। আল­াহর কাছে বিচার দিলাম।

খুলনা মেডিকেল কলেজ-এর ইন্টার্ন চিকিৎসক ফোরামের সদস্য সচিব ডাঃ তাহমিদ মাশরুর বলেছেন, স্যার ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিল এমন অভিযোগে তাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পদত্যাগের দাবি করেছে, এবিষয়ে ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা অবগত নয়।
ডাঃ মোস্তফা কামালকে বার বার মুটো ফোনে এবং তার  হোয়্যাটসআপ নম্বরে ম্যাসেজ এবং কল দিলেও সে রিসিভ করেনি। ম্যাসেজ-এর রিপ্লাই দেননি।

আজকের খুলনা