• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

খুলনায় সাফারি পার্ক নির্মাণ এখন সময়ের দাবি

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৫ জুলাই ২০২২  

বিভাগীয় শহর খুলনা অথচ এ অঞ্চলের মানুষের চিত্তবিনোদনের জন্য নেই তেমন কোন সুব্যবস্থা। খুলনায় একটি সাফারি পার্ক তৈরী করা হলে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হবে। সাথে সাথে খোরাক মিটাবে লক্ষ লক্ষ মানুষের বিনোদনের।দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পদ্মা সেতু ইতিমধ্যে চালু হয়েছে। দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলসহ খুলনাঞ্চলে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের নব দিগন্ত সূচিত হবে। এখন শুধু সময়ের দাবি বিভাগীয় শহর খুলনায় একটি সাফারি পার্ক নির্মাণের।

স্বপ্নটি বাস্তবায়নের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আলোর মিছিল’। সংগঠনের পক্ষ থেকে সাম্প্রতি পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এর নিকট একটি সাফারি পার্কের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকার ড. মোল্লা রেজাউল করিম, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) নির্মল কুমার পাল, সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্পের মিহির কুমার দে প্রমুখ।

খুলনায় সাফারি পার্ক নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আলোর মিছিলের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক শেখ তারেক খুলনা গেজেটকে বলেন, আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের চাবিকাঠি স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেছে। খুলনাতে শুরু হতে চলেছে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ। ইতিমধ্যে, কৃষি জমি, বনাঞ্চল, জলাশয় উজাড় ও ভরাট করে শুরু হয়েছে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ। খুলনা শহরের আশেপাশের গ্রামগুলোতেও শিল্পায়ন ও নগরায়নের ছোঁয়া অনেক আগেই লেগেছে। পদ্মা সেতু চালু হবার পর সেটি এখন হু হু করে বাড়ছে। এ অঞ্চলের বন্য প্রাণী ও পাখিদের আবাসস্থলগুলো ধ্বংস হচ্ছে, সংকুচিত হচ্ছে বন্য প্রাণী ও পাখিদের বেচে থাকার উৎস্যগুলো। খুলনা একটি বিভাগীয় শহর, অথচ একটি বিভাগীয় শহরে বড়সড় তেমন কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের একটি ছোট্ট মিনি চিরিয়াখানা রয়েছে, যেটিতে বন্য প্রাণীদের আটকে রেখে অমানবিক প্রদর্শনে চিত্তবিনোদনের নামে প্রাণী অধিকার হরণ করা হয়।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এ অঞ্চলের পাখিরা সারাদিন বিভিন্ন খাল, বিল নদী, জলাশয়ে আহার করে, সন্ধার আগে রাতের বিশ্রামের জন্য সুদূর ১০০ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনে উড়ে যাওয়া এবং আবার তার পরের দিন জীবিকার জন্য দৈনিক ফিরে আসা সম্ভব নয়। যেভাবে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ হচ্ছে, তাতে আগামীতে বন্য প্রাণী ও পাখিদের জীবিকা ও আশ্রয়স্থল বলে তেমন কিছু থাকবে বলে মনে হচ্ছে না। সেই আগামীর কথা চিন্তা করেই, আলোর মিছিলের পক্ষ থেকে ৯ বছর পূর্বে একটি পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছিলাম একটি সাফারি পার্কের। যেখানে থাকবে জলাশয়, বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ, বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, সেখানে বাঘ, হরিন, শেয়াল, শুকর, বানরসহ দেশীয় প্রজাতির সকল বন্য প্রাণীর থাকবে উন্মুক্ত বিচরণ, আকাশে পাখিদের কোলাহল, ভোর হতেই আশেপাশের সকল জেলা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়বে পাক পাখালিরা, এবং সারাদিন জলাশয়, কৃষি জমির উচ্ছিষ্ট ও পোকা মাকড় খেয়ে কৃষিকে করবে সমৃদ্ধশালী, তারা টিকে থাকবে এবং বাচিয়ে রাখবে প্রকৃতির ঐকতান সৌন্দর্য, আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাস।

যেভাবে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ শুরু হতে চলেছে, তাতে এখন সম্ভব না হলে সেটি আগামীতে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে এবং অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এ অঞ্চলের বন্য প্রাণী ও পাখিদের আবাসস্থল, বেঁচে থাকা, টিকে থাকা ও আমাদের দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রাখা আর সম্ভব হবে না বলেও জানান তিনি।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা