• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের খুলনা

বাবরী মসজিদ মামলার রায়, অযোধ্যার জমিতে হবে মন্দির

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৯ নভেম্বর ২০১৯  

অবশেষে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বহুল প্রতীক্ষিত বাবরি মসজিদ মামলার রায় ঘোষণা করেছে দেশটির সর্ব্বোচ্চ আদালত। রায় অনুসারে, মসজিদের বিতর্কিত ওই জমি সরকার পরিচালিত একটি ট্রাস্টকে দেওয়া হবে। তারা সেখানে একটি মন্দির নির্মাণ করবে। অন্যদিকে মসজিদ নির্মাণের জন্য শহরের উপযুক্ত কোনো জায়গায় মুসলমানদের ৫ একর জমি দেওয়া হবে। 

আজ শনিবার (৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় বেলা পৌনে ১২টার দিকে ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গাগৈ’র নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের একটি বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য ৪ সদস্য হলেন- বিচারপতি শারদ অরবিন্দ, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ ও আব্দুল নাজির। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এ রায় ঘিরে উত্তরপ্রদেশ, বেঙ্গালুরু, জম্মু, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানসহ বিভিন্ন রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের আলীগড় জেলায় ৮ নভেম্বর রাত ১২টা থেকে ৯ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত মোবাইল ও ইন্টারনেট সার্ভিস বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। 

আদালতের রায়ে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন। রায় ঘিরে যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় হাজার হাজার পুলিশ ও আধাসামরিক সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। 

রায় ও পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র বাসভবনে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এর আগে গতকাল শুক্রবার (৮ অক্টোবর) রায় ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কায় ৫শ’রও বেশি মানুষকে আটক করা হয়।  

খবরে বলা হয়, ১৬ শতকে অযোধ্যায় নির্মিত বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে বিতর্কে দশকের পর দশক ধরে হিন্দু ও মুসলিমরা বিভক্ত হয়ে আছে। ওই জায়গার প্রকৃত মালিক কারা বছরের পর বছর ধরে এ সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে আছে। 

হিন্দুদের বিশ্বাস, যে জায়গাটিতে বাবরি মসজিদ নির্মিত হয়েছিল, সেটি মূলত তাদের দেবতা প্রভু রামের জন্মস্থান। ফলে তারা সেখানে একটি মন্দির নির্মাণ করতে চায়। অন্যদিকে মুসলিমদের দাবি ১৬ শতকে নির্মিত এ মসজিদে তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রার্থনা করে আসছিল। 

বিবিসি জানায়, রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ওই অঞ্চলের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেখানকার সবগুলো সড়ক। 

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান ওম প্রকাশ সিং জানান, রায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কোনো ধরনের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের ব্যাপারে বিশেষ পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

‘আদালতের রায় নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো হিন্দু বা মুসলিমের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া বরদাস্ত করা হবে না।’ 

সরকার জানিয়েছে যে কোনো ধরনের সহিংসতা মোকাবিলায় তারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর প্রত্যেক সদস্য ছোটখাটো বা বড় যে কোনো ধরনের দাঙ্গা ঠেকাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সে রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রয়োজনে প্রাদেশিক সরকার একাধিক স্কুলকে অস্থায়ী কারাগার হিসেবে ব্যবহার করবে।    

এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রায় ঘিরে জনগণকে শান্ত ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক বার্তায় তিনি লেখেন, ‘মামলার রায় যাই হোক, তাতে কেউই বিজয়ী বা পরাজিত হবে না। ইন্ডিয়ার জনগণের কাছে আমার আবেদন এই যে, মামলার রায়ে যেন শান্তির মূল্যবোধ শক্তিশালী হয়, সাম্য ও দেশের মঙ্গল হয়, প্রাধান্যের সঙ্গে সেটিই আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। 

রায় যাই হোক না কেন আজমির শরিফের আধ্যাত্মিক গুরু শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন। 

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা